৭ জানুয়ারি প্রায় সবাইকে খুশি করেছে। বিএনপি খুশি—বেশির ভাগ ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাননি। মঈন খান খুশি—জনগণ ভোট বর্জন করেছে। ওবায়দুল কাদের খুশি—জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। স্বতন্ত্ররা খুশি—তাঁরা বিপুলসংখ্যায় জয়লাভ করেছেন। নির্বাচন কমিশন খুশি—ভোট নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা খুশি—আপ্যায়ন ভালো, ব্যবস্থা সুন্দর, পরিবেশ শান্তিপূর্ণ। জনগণ খুশি—তিনজন মন্ত্রী, বেশ কজন সংসদ সদস্য হেরে গেছেন। আওয়ামী লীগ খুশি—নামে-বেনামে সবাই আওয়ামী লীগ, এমন সংসদ তারা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।
[শুধু জাতীয় পার্টির মন খারাপ—আসন কমেছে। শুধু ১৪ দলের মন খারাপ—ফজলে হোসেন বাদশা, হাসানুল হক ইনু হেরে গেছেন।]
এই শিরোনামটা এভাবেও পড়তে পারেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সবার পূর্ব-অনুমান, ধারণা, শঙ্কা মিলে গেছে।
সবচেয়ে বেশি মিলে গেছে বিএনপির। তাঁরা বলছেন, বলেছিলাম কিনা! জনগণ বিএনপির ডাকে সাড়া দিয়ে এই তথাকথিত ভোট বর্জন করেছে। জনগণ সরকারকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে।
ঢাকায় কামাল মজুমদারের এলাকায় ভোট পড়েছে ১৩ শতাংশ, সরকারি হিসাবেই। তাহলে ৮৭ শতাংশ ভোটার ওই আসনে ভোট বর্জন করেছেন।
অন্যদিকে আছে কারচুপি, জাল ভোট, ঐন্দ্রজালিক কারবার, সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ। ভোটে হেরে যাওয়া নৌকা মার্কার প্রার্থীরাই এটা বলছেন। জাতীয় পার্টির জি এম কাদের বলেছেন, ‘সরকারের ইচ্ছানুযায়ী কোথাও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে তারা ঢালাওভাবে অনিয়ম করতে পেরেছে। কোনো কোনো জায়গায় নির্ধারণ করা ছিল, কাকে পাস করানো হবে। অর্থাৎ নির্বাচনটা সরকার নিয়ন্ত্রণ করেছে। আগে যেভাবে নির্বাচন হয়েছে, এটাও সে রকম।’
কাজেই বিএনপির সমর্থক বিশ্লেষকেরা এ কথা জোর দিয়ে বলতেই পারেন, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেই ঠিক কাজটা করেছে। যাঁরা বলছেন, বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত ছিল এবং গিয়ে প্রমাণ করা উচিত ছিল, এই সরকারের অধীন নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, তাঁরা ঠিক বলছেন না। এ সরকারের অধীন যে ঠিকভাবে নির্বাচন হয় না, তা কি ২০১৮ সালেই প্রমাণিত হয়নি!