ড. আলী রীয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট। ২০১৩ সালে উড্রো উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলার্সে দায়িত্ব পালন করেন পাবলিক পলিসি স্কলার হিসেবে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে নিয়মিত লিখছেন, কথা বলছেন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। সম্প্রতি বণিক বার্তাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের রাজনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বদরুল আলম
গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পালাবদলের কালে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংকট তৈরি হয়। সেই সংকট থেকে দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধানের রূপরেখা পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে কোনো বিদেশী বন্ধু, মিত্র বা জোটকে প্রভাবক হয়ে ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। দেশের নিজস্ব সক্ষমতার মাধ্যমে এ সংকট সমাধানের কোনো সম্ভাবনা আছে?
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো সংবিধান। সংবিধানের সবচেয়ে বড় সংকট—শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো ব্যবস্থা বাংলাদেশের সংবিধান তৈরি করতে পারেনি। একটা অস্থায়ী ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত সেটাও বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আপনি বিদেশীদের কথা বলছেন, বন্ধু বলুন বা উন্নয়ন সহযোগী বলুন—তারা কখনো কোনো সমাধান দেয়নি। তারা সাহায্য করেছে, চেষ্টা করেছে, শেষ পর্যন্ত সমাধানের পথ বাংলাদেশের মানুষকে তৈরি করতে হয়েছে। এ সমাধান সবসময় সঠিক তা নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সঠিক হয়নি। সমাধান রাজপথে হয়েছে নাকি আলোচনার মাধ্যমে হয়েছে, সেটা আপনি বিবেচনা করতে পারেন।
শেষ পর্যন্ত সংকটের সমাধান হয় না, সংকট তৈরি হয়। শুধু তা-ই নয়, গত ৫০ বছরে আমরা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারিনি। প্রতিষ্ঠান তৈরি না করলে সংকট মোকাবেলা করবে কে? ব্যক্তি কখনো সংকট মোকাবেলা করে না। প্রতিষ্ঠান তার শক্তি দিয়ে সংকট মোকাবেলা করে। বাংলাদেশ যখন থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রবেশ করেছে, তার পর থেকে প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়নি।