ঢাকার বঙ্গবাজারে প্রথম ভয়াবহ আগুন লেগেছিল ১৯৯৫ সালের ২৭ নভেম্বর। তখন এখানে চারটি হকার্স মার্কেট ছিল। দোকানের সংখ্যা ছিল ৫২৫। এক আগুনে পুরো বঙ্গবাজার ছাই হয়ে গিয়েছিল। আগুনের ঘটনা নিয়ে পরদিন দৈনিক ইত্তেফাকে আট কলামজুড়ে শিরোনাম ছিল, ‘ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজার সম্পূর্ণ ভস্মীভূত।’ মূল শিরোনামের একটু ওপরে লেখা ছিল, ‘অসহায় হাজার হাজার মানুষের সামনে ছাই হয়ে গেল টি হকার্স মার্কেট।’
আগুন লাগার ছবি ছিল একাধিক। আর ছিল দুটি বিশেষ ছবি। একদম ওপরে দুই পাশে সমানভাবে ছাপা হয়েছিল ছবি দুটি। একদম বাঁ দিকে দুই কলামে ছাপা ছবিটি ছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার। তিনি বঙ্গবাজার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। আর একদম ডান দিকের ছবিটি শেখ হাসিনার বঙ্গবাজার পরিদর্শনের। তিনি তখন প্রধান বিরোধী দলের নেত্রী।
পরদিনও ইত্তেফাক ছয় কলামজুড়ে আগুন–পরবর্তী ঘটনা তুলে এনেছিল। শিরোনাম ছিল, ‘বঙ্গবাজারের দোকানীরা কবে আবার পসরা সাজাইতে পারিবেন বলা মুশকিল।’ দ্বিতীয় দিনের লেখাটি ছিল আসলে ব্যবসায়ীদের দুরবস্থার কথা নিয়ে। কারণ, প্রত্যেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন।
সেই বঙ্গবাজারও একসময় ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। যদিও দুর্ঘটনা বা আগুন থেকে রেহাই পায়নি। ২০১৮ সালেও আরেকবার আগুন লেগেছিল। তবে ১৯৯৫ সালের পরে পুরো বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়ার ঘটনা আবার ঘটল এবারই। সেবারও হতাহতের ঘটনা ছিল না, এবারও তা হয়নি। তবে সবকিছু পুড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের নিঃস্ব হওয়ার ঘটনা একই রকম। এমনকি ১৯৯৫ সালে ব্যবসায়ীদের আহাজারির সঙ্গে এবারের আহাজারির ধরনও একই রকম। আর তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, আর এবার করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের। তদন্ত কমিটি গঠন ও রিপোর্ট নিয়ে কী হয়, তা অবশ্য সবারই জানা।