দিন দশেক আগে বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী বাবু শেখের মুঠোফোনে একটা কল আসে। বলা হয়, সিটি করপোরেশন থেকে এক লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে তাঁকে। কিন্তু এই টাকা কোনো ব্যাংক হিসাবে নয়, দেওয়া হবে ক্রেডিট কার্ডে। বাবু শেখ প্রথমে বিশ্বাস করতে না চাইলেও, তাঁর দোকান নম্বর, দোকানের কর্মচারীর সংখ্যা, কত টাকার মালামাল পুড়েছিল—এসব তথ্য হুবহু জানায় প্রতারক চক্র। এতে তাঁর ফোনদাতার ওপর বিশ্বাস তৈরি হয়।
বঙ্গ আদর্শ ইউনিটের দোতলার ৪ নম্বর দোকানের ব্যবসায়ী বাবু শেখ পরের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিচিত এক বড় ভাইয়ের ক্রেডিট কার্ড ছিল। ওনার কার্ডের তথ্য দেওয়ার পর সেখান থেকে ৯৪ হাজার ৪০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। দোকান পুড়ে যাওয়ার পর সাহায্যের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। এখনো ব্যবসা শুরু করতে পারিনি। এর মধ্যে এক লাখ টাকা সাহায্যের কথা শুনে তা বিশ্বাস করেছিলাম। কারণ, এর আগের কিছু মানুষ এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সহায়তা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দেখছি, প্রতারণার শিকার হয়েছি। তাতে বড় অঙ্কের অর্থ হারালাম। এখন দোকান চালু করা তো দূরের কথা, উল্টো পরিচিত বড় ভাইয়ের ক্রেডিট কার্ডের দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে।’
সরেজমিনে গতকাল রোববার বঙ্গবাজারের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু বাবু শেখ নন, এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন ২০ থেকে ২৫ জন ব্যবসায়ী। আর প্রতারক চক্র থেকে ফোন এসেছে শতাধিক ব্যবসায়ীর কাছে। কোরবানির ঈদের আগে ও পরে প্রতারণার এই ঘটনা ঘটেছে। প্রতারণার শিকার ব্যবসায়ীদের অনেকে লজ্জায় এ বিষয়ে মুখও খুলছেন না। আর প্রতারক চক্র সিটি করপোরেশনের কথা বলায় অনেকে ভয়ে কথা বলছেন না।