আওয়ামী লীগের অনিরামেয় ভুলগুলো

প্রথম আলো সোহরাব হাসান প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:১১

বাংলাদেশের তোলপাড় করা ক্ষমতার পালাবদল দেখতে এক ভারতীয় সাংবাদিক বন্ধু ঢাকায় এসেছিলেন। আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তোমাদের এখানে গণতন্ত্রের জন্য বারবার আন্দোলন ও গণ–অভ্যুত্থান হয়েছে, কিন্তু গণতন্ত্র অধরাই থেকে গেছে। তাঁর এই যুক্তির সঙ্গে দ্বিমত করার সুযোগ কম। যে দেশে গণতন্ত্র থাকে, সে দেশে গণ–অভ্যুত্থান হয় না। ব্রিটেনে গণ–অভ্যুত্থান করে ক্ষমতা বদলের কথা ভাবা যায় না। সেখানে নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার বদল হয়। নানা দুর্বলতা সত্ত্বেও ভারতেও নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার বদল হয়। কিন্তু গত ৭০ বছরেও আমরা সেই ধারা তৈরি করতে পারিনি।


৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের মর্মান্তিক বিদায় এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ঘটনা নিশ্চয়ই দলের নেতা–কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের ব্যথিত ও বিমূঢ় করেছে। তাঁরা এত দিন রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ–সুবিধা ব্যবহার করে ক্ষমতার যে ‘স্বপ্নসৌধ’ নির্মাণ করেছিলেন, এক আন্দোলনের ঝড়ে তা খান খান হয়ে পড়ল।


২০০৮ সালের নির্বাচনে যে আওয়ামী লীগ সব শ্রেণির মানুষের (তরুণদের সমর্থনই ছিল বেশি) ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিল, সেই দল এভাবে কেন গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল? কারণ নির্বাচনের আগে জনগণের কাছে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার সিংহভাগই তারা পূরণ করেনি। আবার যেটুকু পূরণ করেছে, তার সুবিধা পেল ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠী।



বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হলো রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার বাইরে থাকতে সাচ্চা গণতান্ত্রিক হয়ে যায়। গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু  নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় জোর দিয়ে কথা বলে।  কিন্তু ক্ষমতায় গেলে এসব বেমালুম ভুলে যায়। আওয়ামী লীগ নেতারা আবারও প্রমাণ করলেন।


পৃথিবীর কোনো দেশেই অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আদর্শ হিসেবে বিবেচিত নয়। এটা হলো গণতন্ত্রের জন্য অনুপযোগী নেতা–নেত্রীদের গণতন্ত্র শেখানোর একটি পদ্ধতি, বিকল্প বন্দোবস্ত। এর জন্য এরশাদ আমলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একসঙ্গে লড়াই করেছে।


আবার বিএনপির শাসনামলে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, বামপন্থীদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করেছিল। এর ফলে দেশে একটি দ্বিদলীয় ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। এটি ভালো কি মন্দ সেই বিতর্কে যাচ্ছি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত চারটি নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু হয়েছিল। অনেকে স্বীকার করবেন, সেসব নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটেছিল।



কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সেই তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা বাতিল করে দেয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে। গণতন্ত্রের কফিনে সেটাই ছিল সম্ভবত শেষ পেরেক। ক্ষমতা বদলের সর্বজনস্বীকৃত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রুদ্ধ করলে কী পরিণতি হয়, আওয়ামী লীগ তা এবার টের পেয়েছে।


আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দৃশ্যমান অনেক উন্নতি হয়েছে। পদ্মা সেতু, মোট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হয়েছে। জনগণ এসবের সুফলও পাচ্ছে। অন্যদিকে দুর্নীতি ও দলীয়করণের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণতা দেখানোর কথা বলে সেটার প্রসার ঘটিয়েছে। সংবাদমাধ্যম বশীকরণ প্রকল্প দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছে। সব সরকারের আমলেই প্রশাসনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ আছে। তবে আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসন ও দলের ভেদরেখাটি পুরোপুরি মুছে ফেলেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us