সম্প্রতি বিদেশে পালিয়ে যাবার হিড়িক পড়েছিল। বিমানবন্দর দিয়ে উঁচুদরের মানুষেরা বৈধপথে পালাতে গিয়ে আটকা পড়ে যাচ্ছিলেন। তাদের অনেকের নামে মামলা থাকায় আইনী ব্যবস্থায় কারাগারে পাঠানোর প্রবণতাই বেশি ছিল। কিন্তু বিমানবন্দর দিয়ে বেশি অর্থসম্পদ সংগে নিতে গেলে ধরাপড়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। সেটা আঁচ করে সীমান্ত পথে দালালদের মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রতিবেশি দেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন অনেকে। সংগে নিচ্ছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা-পয়সা, ডলার, রুপি আরো অনেক কিছু।
কিন্তু অর্থ সংগে নিয়ে দালাল ধরে সীমান্ত পথে বিদেশে পাড়ি জমানো মোটেই নিরাপদ হচ্ছে না। তার কিছু বাস্তব উদাহরণ একদিকে গল্প তৈরির খোরাক যোগাচ্ছে অন্যদিকে পলায়নকারীদের জীবনের মূল্যকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে এনেছে। বেওয়ারিশ লাশ হয়ে সংবাদের শিরোনাম হচ্ছেন অনেকে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের লাশ উদ্ধারের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে জানিয়েছিল ভারতের মেঘালয় পুলিশ। গত ২৬ আগস্ট পূর্ব জৈন্তিয়া পাহাড়ের দোনা ভোই গ্রাামের একটি সুপারি বাগান থেকে ইসহাক আলী খান পান্নার অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনা হয়। ওই এলাকাটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালানোর সঙ্গে পান্নার সঙ্গে বিপুল পরিমাণ ডলার ছিল বলে দাবি করেছে তার স্বজনরা।
‘ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়া (ইউএনআই) লিখেছে, পান্নার কাছে প্রায় দুই কোটি ডলার ছিল বলে তার স্বজনরা দাবি করেছেন। তবে জৈন্তিয়া পাহাড় জেলা পুলিশের প্রধান বলেন একটি রিষ্টওয়াচ ছাড়া আর কিছু উদ্ধার করা যায়নি। তার ভাগ্নে ২৪ আগস্ট দাবি করেছিলেন- ‘তার মামার সঙ্গে থাকা অন্যরা জানিয়েছেন, ওইদিন সকালে শিলংয়ে একটি পাহাড় থেকে পা পিছলে পড়ে মারা গেছেন তার মামা।’
কথা হলো- আমরা পকেটে বিশ হাজার টাকা নিয়ে দিনের বেলায় চলতে গেলেও বারবার পকেটে হাত চেপে দেখি। দুই কোটি ডলার মানে ১০০ ডলারের ২০০টা বান্ডিল, প্রায় ২৫০ কোটি টাকা যা আলাদিনের চেরাগকে হার মানিয়েছে। তিনি কেমনে নিরাপত্তাহীন জঙ্গলের মধ্যে রাতের বেলা যাচ্ছিলেন?
তার কাছে এত ডলার কিভাবে এল? তিনি কি ব্যবসা করতেন যে এত টাকা নিয়ে পালাচ্ছিলেন? সেই কাহিনীও অজানা তাই তদন্ত হওয়া দরকার। ডলারের লোভে উনার সফর সঙ্গীরা উনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে থাকতে পারে। তারপর তারা পাহাড় থেকে পা ফসকিয়ে পড়ে যাওয়ার নাটকও সাজাতে পারে।
অনেকে মনে করছেন, ডলারের জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে যে, এই অস্থির সময়ে ভারতে বর্ডারের দালাল এবং বিএসএফ এর লোকেরা মওকা বুঝে বাংলাদেশ থেকে পলায়নকারীদের নিকট থেকে বিরাট অংকের টাকা পয়সা আত্মসাত করছে!