বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন জমে উঠেছে এবং এই নির্বাচন কেন্দ্র করে জমজমাট হয়ে উঠেছে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করতে শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো এবং আমাদের মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের সফল নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যার সফল নেতৃত্বে আছেন বঙ্গবন্ধুরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেই দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৪ সম্প্রতি প্রকাশ করেছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বরাবরই গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিকে প্রাধান্য দিয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তৈরি করা হয়। অতীতের ইশতেহারগুলোর সঙ্গে যথেষ্ট সামঞ্জস্য এবং ধারাবাহিকতাও রক্ষা করা হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নির্বাচনী ইশতেহারে সবসময়ই একটা নতুনত্ব থাকে। অতীতের দুটো নির্বাচনী ইশতেহারের নতুনত্ব ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার এবং তারই ধারাবাহিকতায় এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে অঙ্গীকার করা হয়েছে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের।
স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের অঙ্গীকার নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৪ এর অন্তর্ভুক্ত করা হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার আগে থেকেই এই স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের কাজ সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে একে পরিপূর্ণ রূপ দেওয়ার লক্ষে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার কর্মসূচি হাতে নেওয়ার কারণে কিছু মানুষ, বিশেষ করে একটি মহল এবং একশ্রেণির মিডিয়া ও আলোচক বিষয় দুটোকে এক করে দেখে নানারকম বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
মূলত গত বছরের শেষ দিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে। সেই থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বিষয় নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। এই আলোচনায় নতুন মাত্রা পায় আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্য নির্ধারণ করায়। এ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই একটি বিষয় সামনে চলে এসেছে এবং তা হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ কি পৃথক দুটো কর্মপরিকল্পনা, নাকি একই কর্মপরিকল্পনার দুটো ভিন্ন নাম।
আজ থেকে দেড় যুগ আগে গৃহীত ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের দেড় যুগ অতিবাহিত হতে না হতেই আরেক দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়ার কারণেই এসব প্রশ্ন এবং আলোচনা শুরু হয়েছে। সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন এবং উৎকর্ষতার বিষয়টি যদি বিবেচনায় নেওয়া হয় তাহলে এটা আর কারও বুঝতে বাকি থাকে না যে ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ কোনো অবস্থায়ই এক বিষয় হতে পারে না, বরং সম্পূর্ণ পৃথক দুটো দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা, যার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা।