৭ জানুয়ারি ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই দেশে নির্বাচন পরবর্তী নির্বাচিত নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করবে। এটা স্বীকৃত যে, অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছালেও নির্বাচন পূর্ববর্তী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে।
অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক সিদ্ধান্ত আটকে আছে নির্বাচন শেষে নতুন সরকারের আগমনের অপেক্ষায়। নির্বাচনের পর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে নির্বাচন পরবর্তী সরকারকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
এর মধ্যে অর্থনীতির যেসব বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন হবে, তার মধ্যে রয়েছে—মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ, রেমিট্যান্স, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব হ্রাস করা, রাজস্ব আয়, ব্যাংক খাত, মুদ্রা বিনিময় হার, ব্যাংক ঋণের সুদের হার প্রভৃতি।
নির্বাচন পরবর্তী সরকারের সর্বপ্রথম গুরুত্ব আরোপ করা উচিত হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার ওপরে। দীর্ঘ সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি থাকায় সাধারণ মানুষ বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ চরম দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার অন্যতম প্রধান পদ্ধতি হচ্ছে সংকোচনশীল মুদ্রানীতি গ্রহণ করা। সংকোচনশীল মুদ্রানীতির উদ্দেশ্য হচ্ছে বন্ডের দাম কমিয়ে এবং সুদের হার বাড়িয়ে অর্থনীতিতে মুদ্রার জোগান হ্রাস করা। যার ফলে ভোগের পরিমাণ কমে, দাম কমে এবং মূল্যস্ফীতি হ্রাস পায়।
এছাড়া সরকার সংকোচনশীল রাজস্ব নীতির সহায়তায়ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার তার ব্যয় সংকোচন করতে পারে এবং করের পরিমাণ বাড়াতে পারে। অধিকন্তু বাজার ব্যবস্থাপনার দিকেও সরকারকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে যেন অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট সৃষ্টি করার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বাড়াতে না পারে।
আমদানিকৃত পণ্য ও যেসব পণ্য কেনাবেচা করা হয় তার উপর রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক, ভ্যাট ও সম্পূরক কর। এসব কমালে দ্রব্যমূল্যের উপর এর প্রভাব কমবে এবং পণ্যের দাম হ্রাস পাবে। কিন্তু এক্ষেত্রে নির্বাচন পরবর্তী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ হবে রাজস্বের পরিমাণ বাড়ানো।