বিএনপির যে কজন নেতা সরকারের ওপর মহাখাপ্পা ছিলেন, কড়া ভাষায় সরকারের সমালোচনা করতেন, সরকার পতনের আন্দোলনে কর্মীদের অনুপ্রাণিত করতেন; শাজাহান ওমর তাদের একজন। কদিন আগেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে ‘ভগবান’, ‘অবতার’ বলে রীতিমতো ভাইরাল হয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি এই গোমরও ফাঁস করে দিয়েছিলেন, বিএনপি আসলে আন্দোলন করে নামকাওয়াস্তে, তাকিয়ে থাকে পিটার হাসের দিকে।
বেচারা পিটার হাস ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কায়। তা নিয়ে কত কাণ্ড হলো। পিটার হাস যে কদিন দেশে ছিলেন না, সে কদিন বিএনপি গর্তে লুকিয়ে ছিল। পিটার হাস ফেরার পরই বিএনপি নেতারা আবার প্রকাশ্যে আসা শুরু করেছেন। শাজাহান ওমরের ভাষায় পিটার হাস যেন সত্যিই বিএনপির জন্য ভগবান।
মেজর (অব.) ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর বীর উত্তম, সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী, পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য। পরিচয় যেটুকু দিয়েছি, তাতে সবারই বোঝার কথা, তিনি কামেল লোক। প্রথম কথা হলো, তার প্রতি আমার চিরকালীন শ্রদ্ধা। এই শ্রদ্ধা শুধু শাজাহান ওমরের জন্য নয়, সব বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য। কারণ আমি অন্তর থেকে বিশ্বাস করি মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা জীবনের মায়া না করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বলেই আমরা একটা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। এই স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা অনেকে অনেক কিছু হতে পারবো। কিন্তু কেউ কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবো না। তাই একজন মুক্তিযোদ্ধার জন্য আমার হৃদয়ে শ্রদ্ধার আসনটি চিরকালের জন্য। পরবর্তী কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচনা-সমালোচনা সেটা আলাদা।
সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর আইনজীবী হিসেবে নতুন ক্যারিয়ার শুরু করেন। বিরল উদাহরণ বটে। তারচেয়ে বড় কথা হলো প্রতিষ্ঠাকাল থেকে তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। সেনাবাহিনীতে থাকার সময় জিয়াউর রহমান সরাসরি তার শিক্ষক ছিলেন। সেই সম্পর্কটা তারা টেনে এনেছেন রাজনীতিতে। প্রায় ৪৫ বছর তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। এখন ৭৭ বছর বয়সে এসে তার মনে হচ্ছে জিয়াউর রহমানের চেয়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ভালো। বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়াকে তার প্রমোশন মনে হচ্ছে।