প্রথম আলো: নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করল। সরকারি দল ও তাদের সঙ্গীরা তফসিলকে স্বাগত জানালেও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে। আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
মাহবুবউল্লাহ: আমাদের দেশে যখন বাজেট পেশ করা হয়, সরকারি ও বিরোধী দলকে ভিন্নমুখী প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে দেখি। সরকারি দল বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দমিছিল করে। আর বিরোধী দল একে গরিব মারার বাজেট বলে প্রত্যাখ্যান করে। নির্বাচনী তফসিলের বিষয়ে সরকারি ও বিরোধী দল মুখোমুখি অবস্থান নিলে বুঝতে হবে, জাতির বিভক্তিটা কত গভীর।
প্রথম আলো: বিএনপিসহ কয়েকটি দল তো নির্বাচন কমিশনকেই মানেনি। সরকারের পাশাপাশি তারা বর্তমান কমিশনেরও পদত্যাগ দাবি করছে।
মাহবুবউল্লাহ: নির্বাচন কমিশন তাদের স্বতন্ত্র ও স্বাধীন অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কয়েক দিন আগে বললেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। এরপরই তাঁকে বলতে শুনলাম, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ আছে। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হবে। এসব কথাবার্তায় ইসির প্রতি জনগণও আস্থা রাখতে পারছে না। দুই দলের মধ্যে যে চরম অবিশ্বাস, এটা আরও ছড়াতে থাকলে দেশের অবস্থা ভয়াবহ হবে। এমনও দিন আসতে পারে, হয়তো নির্বাচন কমিশনেরই আর প্রয়োজন হবে না।
প্রথম আলো: নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও সমঝোতার কোনো উপায় আছে কি না? প্রধান নির্বাচন কমিশনারও জাতির উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় সমঝোতা ও সংলাপের ওপর জোর দিয়েছেন।
মাহবুবউল্লাহ: সমঝোতা তো সব সময়ই হতে পারে। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। চার–পাঁচ মাস ধরে সরকারি দলের নেতারা বিরোধী দল সম্পর্কে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে সমঝোতার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। রাজনীতিতে যখন ব্যক্তিগত বিদ্বেষ প্রকট হয়, তখন এর প্রতিকার কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রথম আলো: তাহলে সমাধান কী?
মাহবুবউল্লাহ: এর সমাধান তো আমরা দিতে পারব না। রাজনৈতিক নেতৃত্বকেই সমাধান বের করতে হবে। তারা দেশকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
প্রথম আলো: ২৮ অক্টোবর যে অঘটন ঘটল, তা এড়ানোর সুযোগ ছিল কি না।
মাহবুবউল্লাহ: আমি মনে করি, এই অঘটন ঘটানোর কোনো দরকারই ছিল না। সেদিন বিরোধী দলের পক্ষ থেকে উসকানি দেওয়া হয়েছে বলে সরকার যে অভিযোগ করে, তা সত্য নয়। ঘটনা যখন ঘটল, তখনো বিএনপির মহাসমাবেশে লোকজন আসছিল। কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ বক্তৃতাও দেননি। তখনই পুলিশের অভিযান শুরু হয়। কোনো রাজনৈতিক দলই চাইবে না, তাদের সমাবেশটি পণ্ড হয়ে যাক।