ইতিহাসের মহান কিংবদন্তি, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ শেখ রাসেল। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে গভীর রজনীতে জন্মগ্রহণ করেন মুজিব পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেল। শেখ রাসেল যেদিন জন্মগ্রহণ করেন, পিতা শেখ মুজিব সেদিন চট্টগ্রামে অবস্থান করছিলেন। সামরিক শাসক আইয়ুব খানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ছোট বোন ফাতেমা জিন্নাহ। সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রার্থী ফাতেমা জিন্নাহর নির্বাচনি জনসভায় যোগ দিতেই শেখ মুজিব চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন। পৃথিবী বিখ্যাত ব্রিটিশ দার্শনিক সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বার্ট্রান্ড রাসেলের নামের সঙ্গে মিলিয়ে ও পারিবারিক শেখ উপাধি যোগ করে সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের নাম রাখা হয় শেখ রাসেল।
বঙ্গবন্ধুর অন্য চার সন্তানের নাম বাঙালি-মুসলমানি হলেও কনিষ্ঠ সন্তানের নামের ভিন্নতা রয়েছে। আজীবন-অনুক্ষণ বাংলা ও বাঙালির প্রতি অতল ভালোবাসায় মোহাচ্ছন্ন বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলের নাম ভিন্ন হওয়ার কারণ ও পটভূমি আছে। বঙ্গবন্ধু পশ্চিমের ইংরেজ দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের ভক্ত ছিলেন। মানবতাবাদী, শান্তির দূত রাসেলের প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করতেন। রাসেল পারমাণবিক যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বৈশ্বিক নেতা ছিলেন। বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্যে বার্ট্রান্ড রাসেল গঠন করেছিলেন কমিটি অব হানড্রেড। শেখ রাসেলের জন্মের দুই বছর আগে ১৯৬২ সালে কিউবাকে কেন্দ্র করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী ক্রুশ্চেভের মধ্যে চলমান স্নায়ু ও কূটনৈতিক যুদ্ধ একপর্যায়ে ভয়ংকর তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে মোড় নেয়। পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল পৃথিবী। এমন এক ধ্বংসোন্মুখ সময়ে বিশ্বমানবতার প্রতীক হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন বিখ্যাত দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল।