অনন্য মানবিক বোধের রাসেল

সমকাল আশিক মুস্তাফা প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০২:০১

বুঁচু– এই আদুরে নামে শেখ রাসেলকে ডাকতেন গীতালি চক্রবর্ত্তী। ’৭২-এর আগস্ট থেকে ’৭৫ সালের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি গৃহশিক্ষক ছিলেন বুঁচুর। তাঁর একটি লেখায় গীতালি একটা ঘটনার কথা বলেন, যেখানে দেখা যায়, ৩২ নম্বরের পাশের এক বাড়িতে এক দিন এক বুড়ি ভিক্ষা করতে এলে তাকে বলা হয়, ভিক্ষা নয়, বাড়ির একটা কাজ করে দিলে ১ টাকা দেওয়া হবে। বুড়ি রাজি হন। কিন্তু কাজ শেষে বুড়িকে মাত্র ২৫ পয়সা দেওয়ায় তিনি কান্নাকাটি করতে করতে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। এ ঘটনায় কষ্ট পেয়ে রাসেল সেই বুড়িমাকে পরম যত্নে তুলে এনে গেটের সামনে বসিয়ে রাখে। বলে, আব্বা (বঙ্গবন্ধু) আসলে কথা বলিয়ে দেবেন। বিচার চাইতে হবে। তিনি বিচার করে দেবেন। দুপুরে তাঁকে খাবারও দেওয়া হয়। এদিকে শীতে বুড়িমার জবুথুবু অবস্থা। কখন কী হয়, বলা যায় না। কিন্তু রাসেলের এক কথা, আব্বা এলে বিচার হবে, তারপর বুড়িমা যাবেন। পরে বুড়িকে রাতের খাবার এবং আরও বেশি টাকা দেওয়ার প্রস্তাবে শেখ রাসেল তাঁকে যেতে দিতে রাজি হয়। তবে আব্বা এলে বুড়ির পক্ষ থেকে এ অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে বিচার চাওয়া হবে বলে জানান দিয়ে রাখে সে।


এ অসাধারণ মানবিক বোধের শিশুটিকেই বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের অন্য অনেকের সঙ্গে ১৫ আগস্ট হত্যা করে খুনির দল। বন্দুকের নল যদি কথা বলতে পারত হয়তো সেদিন বলত, কী অপরাধ করেছে এই ছোট্ট মানুষটা? কিন্তু হায়; কথা বলার ক্ষমতা নেই বন্দুকের! তাই তার মাধ্যমেই করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না দেওয়ার শেষ চেষ্টা। এই চেষ্টা অনেকটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জয়ী হতে জাপানের ফু-গো বেলুনের মতো। ১৯৪৫ সালের ৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য ওরেগনের ছোট্ট ব্লাই শহরে এক বিশেষ বেলুন বিস্ফোরিত হয়ে ৬ জন নিহত হয়, যাদের মধ্যে ৫ জনই ছিল শিশু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে এটি ছিল একমাত্র হতাহতের ঘটনা। যে বেলুনের কারণে এ ঘটনা ঘটে, সেটি যুদ্ধে সব দিক থেকে কোণঠাসা হয়ে পড়া জাপানিদের যুদ্ধজয়ের শেষ চেষ্টার অংশ ছিল। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের কাছে রাসেলের প্রাণ ভিক্ষা চাওয়া ছিল অনেকটা বোতলে চিঠি লিখে সমুদ্রে ছেড়ে দিয়ে প্রাপকের হাতে পৌঁছার আশা করার মতো।


সেদিনের ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সেই ১১ বছরের শিশু রাসেলকে হত্যার মধ্য দিয়ে ঘাতকরা মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্যতম অপরাধ করেছে। এ ধরনের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড শুধু রাসেলের জীবনকেই কেড়ে নেয়নি; ধ্বংস করেছে তার সব অবিকশিত সম্ভাবনা। রাসেল বেঁচে থাকলে নিঃসন্দেহে নিজেকে দেশ গড়ায় নিয়োজিত রাখত। কিংবা হতে পারত বার্ট্রান্ড রাসেলের মতোই স্বমহিমায় উজ্জ্বল বিশ্বমানবতার প্রতীক।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us