সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবি আদায়ে টানা কর্মসূচিতে রয়েছে বিএনপি। তাদের দাবি, জনসম্পৃক্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই দাবি আদায়ে তারা তৎপর। তবে গত শনিবার ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে অবস্থান কর্মসূচিকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হঠাৎ চাপে পড়ে গেছে দলটি। কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে। দলটির মূল্যায়ন, এর মধ্য দিয়ে সরকার পুরোনো কৌশলে তাদের চাপে রাখার চেষ্টা করছে।
এদিকে সাময়িক চাপ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে কৌশলে পরিবর্তন এনেছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে দলটির পক্ষ থেকে একদফা আন্দোলনের কর্মসূচি পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ঘোষণাও করা হয়েছে নতুন কর্মসূচি। ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিতে নিপীড়ন-নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ সোমবার ঢাকাসহ দেশের সব মহানগর ও জেলা সদরে জনসমাবেশ করবে দলটি। এদিন কেন্দ্রীয়ভাবে বিকেল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় মহাসমাবেশকে ঘিরে সারা দেশ থেকে আসা নেতাকর্মীদের ফের তৃণমূলে ফেরত পাঠানো নতুন এ কর্মসূচির লক্ষ্য বলে বিএনপি সূত্র বলছে। আপাতত কেন্দ্র ও তৃণমূলে ঘুরেফিরে টানা কর্মসূচি পালন করা হবে।
সরকারের অবস্থান দেখে আন্দোলনের কৌশল বদল এবং সে অনুযায়ী কর্মসূচিও নির্ধারণ করা হবে। গত শনিবার বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ১২ জুলাই নয়াপল্টনে সমাবেশ থেকে ১৮ ও ১৯ জুলাই ঢাকাসহ দেশব্যাপী দুদিনের পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফার আন্দোলনে নামে বিএনপি। এরপর ২২ জুলাই সোহরাওয়ার্দীতে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ থেকে ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই মহাসমাবেশে যোগ দিতে কেন্দ্র থেকে সারা দেশের নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়। দলটির উদ্দেশ্য ছিল, পরবর্তী কর্মসূচিগুলোতে নেতাকর্মীদের ব্যাপক হারে সম্পৃক্ত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আন্দোলনকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো। সে কারণে মহাসমাবেশের বক্তৃতায় শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবাই ‘লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ঘরে না ফেরার’ জন্য দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান। কেউ কেউ সমবেতদের অঙ্গীকারও করান। এর মাধ্যমে সারা দেশ থেকে আসা নেতাকর্মীদের ঢাকায় অবস্থানের পরোক্ষ নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিএনপির পরিকল্পনা ছিল, আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত টানা কর্মসূচি দেওয়া। আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কারণে কয়েক দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত রেখে ধারাবাহিকভাবে ঢাকায় সমাবেশ, বিক্ষোভ, অবস্থান, ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা দলটির।