জাতীয় নির্বাচন কি দু’তিন মাস পরই? সে নির্বাচনে হেরে যাবে আওয়ামী লীগ? অথবা বিএনপির ‘তীব্র থেকে তীব্রতর’ আন্দোলনের তাপ-চাপে সরকার ক্ষমতা ছেড়ে দেবে? এসব প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বিএনপির কয়েকজন নেতা বলে বেড়াচ্ছেন, এ সরকার ক্ষমতায় আছে আর মাত্র দু-তিন মাস। কোত্থেকে, কোন শক্তিতে তাঁরা এমন বার্তা দিচ্ছেন? এ অবস্থায় বিএনপি মহাসচিব নয়াপল্টনের সমাবেশে দিনতারিখ উল্লেখ না করে বলেছেন, হাতে সময় খুব কম; এ সময়ের মধ্যে সরকারকে দ্রুত ‘সেফ এক্সিট’ নিতে হবে। (সমকাল, ১৪ মে ২০২৩)।
ওদিকে নির্বাচন প্রশ্নে সরকারের মনোভাব একদম খোলাসা। সংবিধানের বাইরে গিয়ে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচন না দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কারভাবে এ বার্তা জানিয়েছেন দেশ-বিদেশ সব জায়গায়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান সফরের সময় তা বলে এসেছেন। দেশে ফিরে প্রথাগত সংবাদ সম্মেলনেও তাঁর অবস্থান আরও পরিষ্কার করেছেন। সেই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্যারান্টি-ওয়ারেন্টিও দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনকালীন সরকারে সংসদে থাকা দলগুলো চাইলে তাদের কাউকে কাউকে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার ইঙ্গিতও করেছেন। তবে বিএনপির মতো সংসদে যারা নেই, তাদের বিষয়টি চিন্তায় নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। এই অবস্থায় ক্ষমতায় যেতে চাইলে, নিজেদের সক্ষম-সামর্থ্যবান ভাবলে, নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া গণতান্ত্রিক পথ নেই বিএনপির সামনে।
হিসাব মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আরও সাত-আট মাস। আর আগাম নির্বাচন হলেও দু’তিন মাসের মধ্যে তা সম্ভব নয়। তাহলে কোন শক্তি-লক্ষ্য-উপলক্ষকে ভরসা করে দু’তিন মাসের ‘ডেডলাইন’ দিচ্ছে বিএনপি? রাজনীতিতে ক্ষমতা অবশ্যই বড় ফ্যাক্টর। টানা ১৫ বছর বিএনপি ক্ষমতাহীন। ক্ষমতায় থেকে জন্ম নেওয়া এবং ক্ষমতামুখী কোনো দলের জন্য এমন অবিরাম ক্ষমতাহীনতা অবশ্যই বড় সংকট। দলের নেতাকর্মীর মধ্যে অসহিষ্ণুতা তৈরি হওয়াও স্বাভাবিক। ক্ষমতার আশায় আশায় এতদিন চলে যাওয়া তাদের জন্য হতাশাজনকও।