রাশিয়া-ইউক্রেনকে ঘিরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এরই মধ্যে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) রোহিঙ্গাদের জন্য মাথাপিছু খাদ্যসহায়তা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে আগামীকাল মঙ্গলবার জেনেভায় অনুষ্ঠেয় উন্নয়ন সহযোগীদের বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট যেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ থেকে সরে না যায়, সে বিষয়টিতে অগ্রাধিকার থাকবে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের গণহত্যা থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের চলতি বছরের মানবিক সহায়তার জন্য ৮৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের প্রয়োজন। জেনেভায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় উন্নয়ন সহযোগীদের বৈঠকে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ওই সহায়তা চাওয়া হবে।
জেআরপি নিয়ে জেনেভার বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তিনি অবশ্য বলছেন, ৭ মার্চ জেনেভায় রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার প্রকল্প যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনা (জেআরপি) প্রকাশ করা হবে। জেআরপির বিস্তারিত প্রকাশের পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুটি যেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভাবনা থেকে দূরে সরে না যায়, সে আহ্বানটি থাকবে। রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার পাশাপাশি রাজনৈতিক সমাধানের জন্য আবারও আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চাইব। গত বছর জেআরপিতে যে প্রতিশ্রুতি ছিল, তার ৬২ শতাংশ পূরণ হয়েছে। ফলে এবার আমাদের আহ্বান থাকবে, অঙ্গীকারের হার যেন ৬২–এর বেশি হয়।’
ডব্লিউএফপি এরই মধ্যে তহবিল কমানোর কথা ঘোষণা করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কী বলা হবে, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আর্থিক সহায়তার বর্তমান ধারা চলতে থাকলে মে মাস পর্যন্ত ডব্লিউএফপি জনপ্রতি খাদ্যসহায়তা অর্ধেকে নেমে আসার যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তা আসলেই ভয়ংকর। আশা করছি, বিষয়টি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পক্ষ থেকে তোলা হবে। আর আমাদের প্রস্তাব থাকবে, কক্সবাজারে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার যে প্রশাসনিক খরচ, তা কমিয়ে আনতে যতটা সম্ভব স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থাপনার। কারণ, আমাদের বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলো দক্ষতার সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে কাজ করছে। কাজেই বাংলাদেশের স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুক্ত করার মাধ্যমে খরচের সাশ্রয় হবে। ফলে ওই অর্থ খাবারের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি গত বছর থেকে চালু শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের খাতে ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যাবে।’