ধরা যাক, সরকারপ্রধান আমাকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন। তাহলে আমি কী করতাম? চমকে উঠবেন না! আমি দলীয় রাজনীতি থেকে যোজন দূরের মানুষ। ভুলেও কোনো সরকারপ্রধান আমাকে বাজেট প্রণয়নের দায়িত্ব দেবেন না—এটা স্থিরনিশ্চিত। তাই এটা নিছক অর্থনীতিবিদের হাতের জাদুর কাঠি ‘ধরা যাক’ (এসাম্পশন) বৈ অন্য কিছু নয়! তবুও, জনান্তিকে বলে রাখি আমি দীর্ঘদিন বাংলাদেশের দুই কৃতী অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও শাহ এএমএস কিবরিয়ার নেতৃত্বে বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলাম ও দেশ-বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছুটা সময় পাবলিক ফাইন্যান্স বিষয়ে পাঠদান করেছি।
সংক্ষিপ্ত বাজেট বক্তৃতা
প্রথমেই, যেহেতু আমার নাম থাকবে, বাজেট বক্তৃতাটা ঠিক করতাম। আমাদের অর্থমন্ত্রীর ১৭২ পৃষ্ঠার বাজেট বক্তৃতাকে অনধিক ৫০ পৃষ্ঠায় সীমিত করতাম। উল্লেখ্য, ভারতের অর্থমন্ত্রীর কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট বক্তৃতা সংযুক্তিসহ মাত্র ৩২ পৃষ্ঠার। কিন্তু কীভাবে বাজেট বক্তৃতা অনধিক ৫০ পৃষ্ঠায় আনব?
আমাদের দেশে বাজেট বক্তৃতার খসড়া প্রথম খণ্ড সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে প্রাপ্ত ইনপুটের ভিত্তিতে অর্থ বিভাগের ও দ্বিতীয় খণ্ড জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা তৈরি করে থাকেন। অনধিক ৫০ পৃষ্ঠার মধ্যে, অনধিক পাঁচ পাতা বরাদ্দ করতাম বাজেটের প্রেক্ষিত অর্থাৎ বৈশ্বিক ও জাতীয় পরিস্থিতি আলোচনার জন্য। প্রথম খণ্ডের বক্তৃতার জন্য বরাদ্দ হতো ২৫ পৃষ্ঠা, দ্বিতীয় খণ্ডের জন্য ১৩ পৃষ্ঠা। বাকি সাত পৃষ্ঠা সংযুক্তির জন্য। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে যাচিত ইনপুট অনধিক ৫০০ শব্দে সীমিত করতাম।