প্রিয় | ইন্টারনেট লাইফ

মো. শহীদুল হক

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো

শহীদুল হক বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক: মো. শহীদুল হক ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন অব মাইগ্রেশন (আইওএম) এর অভিবাসন বিষয়ক উপদেষ্টামণ্ডলীর একজন সদস্য। সম্প্রতি তিনি কমিটি অন দ্য রাইটস অব অল মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স এন্ড মেম্বারস অব দেয়ার ফ্যামিলিস (সিএমডব্লিউ) এর সদস্য হিসেবে (২০১৮-২১ মেয়াদের জন্য) পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি অভিবাসীদের মানবাধিকারের একজন সক্রিয় প্রবক্তা এবং এ লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি সংস্থা ও সুশীল সমাজের সাথে অভিবাসীদের অধিকারের স্বপক্ষে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।

তিনি ২০০১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আইওএম এর বিভিন্ন আঞ্চলিক দপ্তর ও জেনেভাস্থ সদর দপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে ২০১০-১২ মেয়াদে তিনি আইওএম এর পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এ সময় তিনি সংগঠনটির বহিঃসম্পর্ক, দাতা সংস্থাসমূহের সঙ্গে লিয়াজোঁ এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন নীতি নিয়ে কাজ করেছেন। এর পূর্বে তিনি ২০০৭-০৯ মেয়াদে আইওএমের মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে আঞ্চলিক প্রতিনিধি (কায়রোভিত্তিক) এবং ২০০১-০৬ মেয়াদে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি (ঢাকাভিত্তিক) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৫ সালে তিনি আইওএম-এর ‘মহাপরিচালক পদক’ অর্জন করেন।

শহীদুল হক বিসিএস (পররাষ্ট্র) ক্যাডারের ১৯৮৪ ব্যাচের সদস্য হিসেবে জানুয়ারি ১৯৮৬-তে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। তিনি লন্ডন, ব্যাংকক এবং জেনেভাস্থ বাংলাদেশ মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন শাখায়ও তিনি পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৬-৯৮ মেয়াদে তিনি এখানে পরিচালক (এফএসও) হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। জেনেভাস্থ বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে প্রথমে কাউন্সেলর এবং পরবর্তীতে মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ওয়াইপো, আইএলও, আইওএম এবং আইএইএ (ভিয়েনা) সংক্রান্ত বিষয়গুলো তত্ত্বাবধান করতেন।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লেচার স্কুল অব ল’ এন্ড ডিপ্লোম্যাসি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। একাডেমিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এখানে ‘অনারেবল মেনশন ফর রবার্ট বি. স্টুয়ার্ড পদক’ প্রাপ্ত হন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে উভয় পর্যায়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে স্মাতক ও স্মাতকোত্তর ডিগ্রি প্রাপ্ত হন। অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর পদক, গ্রান্টস কমিশন পদক এবং চ্যান্সেলরস গোল্ড মেডেল অর্জন করেন। অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, উন্নয়ন, বাণিজ্য এবং মানবাধিকার বিষয়ে জনাব হক বিশেষভাবে আগ্রহী। অভিবাসন এবং মানবপাচার বিষয়ে তার প্রবন্ধ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আইওএম প্রণীত ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্ট এর সম্পাদনা পরিষদের সদস্য ছিলেন। আইওএমের তিন খন্ডের এসেনশিয়ালস অব মাইগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট (২০০৪) এবং আইওএম-ওএসসিই প্রণীত শ্রমিক অভিবাসন ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল (২০১০) প্রণয়নেও তার অবদান রয়েছে।

শহীদুল হক বিবাহিত এবং দুই কন্যা সন্তানের জনক।