প্রিয় | ইন্টারনেট লাইফ

গ্রেটা থানবার্গ

সুইডিশ বংশোদ্ভূত দুনিয়া কাঁপানো কিশোরী জলবায়ুকর্মী

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৬ বছর বয়সী সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থানবার্গ এক বক্তৃতার মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। অনলাইনের কল্যাণে সেই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়। গ্রেটা থানবার্গ একজন জলবায়ুকর্মী। সে সময় অ্যানুয়াল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে উপস্থিত শীর্ষ নেতাদের সামনে দাঁড়িয়ে গ্রেটা থানবার্গ জলবায়ু নিয়ে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বলেন, “কিছু মানুষ বলেন, আমরা সবাই মিলে নাকি জলবায়ু সংকট তৈরি করেছি। কিন্তু সেটি সত্যি নয়। যদি কোনো একজন অপরাধী হয়, তার জন্য সবাইকে দায়ী করা উচিত নয়। যারা অপরাধী, তাদেরকেই দায়ী করতে হবে। আর জলবায়ু সংকটের পেছনে দায়ী হলো কিছু মানুষ, কিছু প্রতিষ্ঠান, এবং কিছু নীতি-নির্ধারক, যারা খুব ভালো করেই জানেন অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে তারা পৃথিবীর কী ভীষণ ক্ষতি করে চলেছেন। এবং আমার বিশ্বাস, সেইসব মানুষদের মধ্যে অনেকেই আজ এখানে উপস্থিত আছেন।”

ওই বক্তৃতার বিডিও পরবর্তীতে ভাইরাল হয়ে পড়ে। তারও আগে ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে স্কুল বাদ দিয়ে টানা তিন সপ্তাহ সুইডিশ পার্লামেন্টের সামনে বসে থাকেন গ্রেটা। এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সেজন্য প্রতিবাদ। তিনি তার কর্মকাণ্ডের কথা ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে পোস্ট করেন। আর মধ্য দিয়েই ক্রমান্বয়ে জনমত তৈরি করতে থাকেন। এরপর ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি ঘোষণা দেন প্রতি শুক্রবার তিনি সুইডিশ পার্লামেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবেন, যতদিন পর্যন্ত না তারা তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার ব্যাপার অঙ্গীকার দেয়। এরপর ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি প্রতি শুক্রবার তার আন্দোলন চালিয়ে যান। শুক্রবারের এই আন্দোলনের নাম দেন, ‘ফ্রাইডেস ফর দ্য ফিউচার’।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে #FridaysForFuture ট্রেন্ডের মাধ্যমে স্কুলগুলোতে বিক্ষোভের আয়োজন করেছেন গ্রেটা। তার ডাকে সাড়া দিয়ে জার্মানি, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ ১০৫টি দেশের ১,৬৫৯টি স্থানে শিক্ষার্থীরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ও মিছিল করে।

যদিও গ্রেটার ডাকা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুলের পড়া বাদ দিয়ে রাস্তায় নামবে, এ বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না রক্ষণশীল অনেক মানুষই। তবে কেউ কেউ আবার এটিকে কেবল নৈতিকই নয়, সম্পূর্ণ যৌক্তিক বলেও মনে করছে। তাদের মতে, বর্তমানে অবস্থা যতটা সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে, তাতে এ ধরনের আন্দোলনের প্রয়োজন আছে।