আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশর মাঠের লড়াই। তবে তীব্র ঠাণ্ডা আর কনকনে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল লড়ছে চার-পাঁচদিন আগে থেকেই। এমন ঠাণ্ডার জন্য আগে থেকে প্রস্তুত ছিল না টাইগাররা। এই সময়ে আয়ারল্যান্ডসহ ইংল্যান্ড জুড়ে চলে সামার (গ্রীষ্মকাল)। কিন্তু ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় খেলতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। বিরূপ আবহাওয়া দলের ইনজুরি ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ডে এখন অনেক ঠাণ্ডা। ঠাণ্ডাতে শরীরের মাংসপেশী জমে যায়। ঠিকভাবে কাজ করতে চায় না। হঠাৎ করে জোর দিলে ঝুঁকি বাড়ে ইনজুরির। আবার জ্বর, কাশি, সর্দি হওয়ারও প্রবল সম্ভাবনা থাকে।’এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয়? বিসিবির চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী বিশ্বকাপ দলকে ইনজুরি থেকে বাঁচতে ওয়ার্মআপ বাড়িয়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সাধারণ ভাবেই খেলার আগে ওয়ার্মআপ করে নিতে হয়। এতে হঠাৎ করে মাংসপেশীতে চাপ পড়ে না। এখন ক্রিকেটারদেরর সাধারণ সময়ের তুলনায় বেশি ওয়ার্মআপ করতে হবে। আমার মতে ১ ঘণ্টা বা ২ ঘন্টা পর পর ওয়ার্মআপ করে নিতে হবে। বিশেষ করে ফিল্ডারদের জন্য এটি বেশি জরুরি। এতে করে মাংসপেশীগুলো সতেজ থাকবে। ইনজুরির ঝুঁকিও কমে আসবে।’হিমেল হাওয়া থেকে বাঁচতে খেলোয়াড়দের বিশেষ খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিসিবির চিকিৎসক। দেবাশিষ চৌধুরী বলেন, ‘এমন ঠাণ্ডা কন্ডিশনে বাতাসের কারণে জ্বর ছাড়াও সর্দি, কাশি হতে পারে। তাই আমার পরামর্শ হলো মাঠে খেলা বা অনুশীলনের পর নিজেদের যতটা সম্ভব ইনডোরে রাখতে হবে। মানে বাতাস কম এমন স্থানে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে ভারি-মোটা কাপড় পরতে হবে। আমার মতে একটি নয়, দুই তিনটি গরম কাপড় পরা এক্ষেত্রে ভালো। এছাড়াও নাকে, কানে যেন ঠাণ্ডা বাতাস বেশি প্রবেশ না করে সেটিও খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে ইনজুরি ও ঠাণ্ডা লাগার ঝুঁকি কমে যাবে অনেকটাই। আর যদি কারো এমন সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই বিশ্রাম নিয়ে তা সারাতে হবে।’ বিশ্বকাপ দলের বেশ ক’জন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার রয়েছেন ছোট-বড় ইনজুরি ঝুঁকিতে। বিশেষ করে তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন ও সাইফুদ্দিন। তাদের প্রসঙ্গে দেবাশিষ চৌধুরী বলেন, ‘যারা ইনজুরিতে ছিল তারা এখন অনেকেই সুস্থ। তবে সবাই কিন্তু একটি রিহ্যাব (পুনর্বাসন) প্রক্রিয়াতে আছে। তাই মনে করি, তাদের জন্য বড় কোনো ঝুঁকি নেই। তবে নিজেদের প্রতি আরো বেশি যত্নবান হতে হবে। ছোট ছোট ভুলগুলোও করা যাবে না। আর নিয়মিত ফিজিওর পরামর্শ নিতে হবে। কোনো সমস্যা হলে জানানো প্রয়োজন।’ আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে ১লা মে দেশ ছাড়ে বাংলাদেশ দল। সেখানে স্বাগতিকরা ছাড়াও টাইগারদের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফাইনালে যেতে পারলে টাইগাররা খেলবে মোট ৫টি ম্যাচ। ১৭ই মে ফাইনাল শেষে ইংল্যান্ড যাবে টাইগাররা। ২৬শে মে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বিশ্বকাপ মিশন। তাই লম্বা এই সফরে টাইগারদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে ইনজুরি থেকে নিজেদের রক্ষা করা।