দলিল ও দুর্নীতি সমার্থক শব্দ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, এই সেবায় ক্রমাগত দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, দেশব্যাপী কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া দেশের সব সাব- রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ লেনদেন স্বাভাবিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।আজ রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর সম্মেলন কক্ষে ‘ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবার সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সেবার খাতটা দুর্নীতিতে ভরা। ভূমির দলিল নিবন্ধন সেবা জনগুরুত্বপূর্ণ এবং সরকারের রাজস্ব আহরণের অন্যতম প্রধান উৎস হলেও এই সেবার যুগোপযোগী মানোন্নয়নে আইনি পদ্ধতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যথাযথ পরিকল্পনা ও উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আইনি জটিলতার কারণেও কিছু অস্পষ্টতা ও বিরোধিতা হয়ে আসছে। হালনাগাদ খতিয়ান সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতে নিয়মিত সরবরাহ হচ্ছে না। এছাড়াও আছে কম জনবল, লজিস্টিকস ও আর্থিক বরাদ্দ এবং দুর্বল অবকাঠামো ও ডিজিটালাইজেশনের ঘাটতি।ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নিয়মবহির্ভূতভাবে সেবাগ্রহীতারদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এই আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে বিভিন্ন অংশে বিভিন্নজনের পারস্পরিক যোগসাজশ থাকায় অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতা কাঠামো যৌথভাবে কাজ করছে না। ফলে এর প্রতিটি পর্যায়ে অনিয়ম দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছে।সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সর্বশেষ ২০১৭ সালের খনা জরিপের ফলাফল অনুযায়ী ৪২.৫ শতাংশ খনা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে সেবা গ্রহণের সময় দুর্নীতির শিকার হয়েছে এবং এদের মধ্যে ২৮.৩ শতাংশ খনাকে গড়ে ১১ হাজার ৮৫২ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নিবন্ধন অধিদপ্তর এর অধীনে ৩৬ লাখ ৭২ হাজার ৬২৮টি দলিল নিবন্ধন হয়েছে। এর থেকে মোট ১২ হাজার ৪৩২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।২০১৮ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের আগস্ট সময়ের মধ্যে এ গবেষণার তথ্য সংগ্রহ বিশ্লেষণ এবং প্রতিবেদন প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করা হয়।