অনেক আগে থেকেই ছিল কানাঘুষা! ২০২৩ সালে তা বড় হয়, যখন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গেলেন। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে কাতারে ছিলেন। তার পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ববি।
এর সূত্র ধরেই তখন ববির সরাসরি রাজনীতিতে আসার বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। অবশ্য পরে প্রধানমন্ত্রী এর ব্যাখ্যা দেন। তিনি জানান, ৭ মার্চ ববির ফুল দিতে যাওয়ার পেছনে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই। পরিবারের সদস্য হিসেবে ফুল দিয়েছেন ববি।
এরপর কিছুদিনের জন্য তা থামে। কিন্তু ক’দিন পর নির্বাচন যখন সামনে আসে—আবারও ঘুরে ফিরে সেই আলোচনা! সবার নজরে আবারও সেই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ববি সরাসরি জড়িত নন। তবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় নেপথ্যে থেকে ভূমিকা পালন করেন ববি। তাই খেয়াল রাখা হচ্ছিল রাজনীতির কর্মকাণ্ডে ববি এবার কতটা জড়ান। কিন্তু দেখা গেল দুইবারের মতো এবারও ববি নেপথ্যেই রইলেন। রাজনীতির খাতায় নাম ওঠালেন না।
১৪৩১ বঙ্গাব্দের পয়লা বৈশাখে ববির সাথে দেখা হলো। ছোট্ট করে পুরোনো প্রসঙ্গ তুললাম। গুলশান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্কে স্ত্রী পেপি কিভিনিয়ামি সিদ্দিককে সঙ্গে নিয়ে সাত সকালে ববি এসেছিলেন গান শুনতে।
আশেপাশে ঘুরে ঘু্রে দেখছিলেন দুইজনে। আগের রাতেও একই কাণ্ড! পার্কের সামনের রাস্তায় ছেলেমেয়েরা যখন আলপনা আঁকছিল—ববি তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে হাজির। সঙ্গে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য ছোট বোন টিউলিপ সিদ্দিক, আরেক বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী ও তাদের স্বামী সন্তান। এসেই ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা রং তুলি নিয়ে বসলেন।
অদ্ভুত আনন্দ তাদের চোখেমুখে! সহজেই মিশে গেলেন সাধারণে। অনেকে বুঝতেই পারছিলেন না, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা তাদের পাশে বসেই রং মেলাচ্ছেন ব্রাশে।
চৈত্র সংক্রান্তির ঐ রাতেই ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ববির সাথে অনেকক্ষণ কথা হয়। বাংলা, বাংলাদেশ, ভাষা, বৈশাখ, মেলা, সংস্কৃতি, আলোচনায় কত কী! এর আগেও ববির সাথে কথা হয়েছে। আলোচনায় পুরোভাগ জুড়ে ছিল রাজনীতি, তারুণ্য বা অর্থনীতি প্রসঙ্গ! কিন্তু এবার আমরা কথা বলছিলাম শুধুই বাংলা আর বাঙালি নিয়ে।
কী দারুণ তীক্ষ্ণ তার অনুভূতি। কেমন করে দেশজ সংস্কৃতি পৌঁছাতে হবে নতুন প্রজন্মের কাছে—তা নিয়ে তার ভাবনা, খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন আর নজর রাখছিলেন নিজের ছোট সন্তানের দিকে। ওরা তখন রং তুলি নিয়ে মহাব্যস্ত। ববি কখনো তাদের কাছে যাচ্ছিলেন আবার কথা শেষ করে আমার কাছে ফিরে আসছিলেন।