দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগের চেষ্টা কতটুকু সফল হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে সরকার পতনের আন্দোলনে আছে। অবশ্য এই আন্দোলনে দলটি সফল হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। তবে নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরু থেকে বিএনপি ভাঙার যে তৎপরতা ছিল তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় দলটির নীতিনির্ধারকরা স্বস্তিতে আছেন। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের মূল্যায়ন হচ্ছে, নানা চাপ ও প্রলোভন থাকার পরও ‘দল ভাঙার প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করতে না পারায় সরকারের পরিকল্পনা হোঁচট খেয়েছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা বিএনপির জন্য এটিই এই মুহূর্তের বড় সাফল্য।
বিএনপি নেতাদের বিশ্লেষণ হচ্ছে, দল ভাঙার তৎপরতার অংশ হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গ্রেপ্তার, মামলা এবং কয়েকশ নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। নেতাদের ভোটে নিতে তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম ও বিএসপি নামে নতুন নতুন দল গঠন করা হয়েছে। এসব দলকে এখন কিংস পার্টি বলা হচ্ছে। নবগঠিত এই দলগুলো বিএনপির সাংগঠনিক কোনো বড় ক্ষতি করতে পারেনি।
তবে বিএনপিতে একেবারেই আঁচড় লাগেনি তা নয়। গত বুধবার (২৯ নভেম্বর) কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরদিন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকায় নির্বাচনের ঘোষণা দেন। বৃহস্পতিবার তিনি নৌকার প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা একরামুজ্জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। শাহ আবু জাফর বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সব মিলিয়ে মোট ১৪ জন বিএনপি নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে আটজন কেন্দ্রীয় ও ছয়জন জেলা নেতা। তাঁদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নেতা শুধু শাহজাহন ওমর। পক্ষ বদলের তালিকায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলনসহ কয়েকজনের নাম শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত তাঁদের বিএনপি ভাঙার তৎপরতার অংশ করা যায়নি।