শরীরে পোড়া ক্ষত নিয়ে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের শয্যায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাতরাচ্ছেন বাসচালক সবুজ মিয়া। সংসারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বলতে তিনিই। কিন্তু রোজগার বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে স্বজন আর পরিচিতজনদের কাছে হাত পাততে হচ্ছে। কবে সুস্থ হয়ে গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে নিতে পারবেন; আয়ে ফিরবেন সেই দুশ্চিন্তায় দিন পার করতে হচ্ছে তার পরিবারকে।
শুধু সবুজই নন; বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধের মধ্যে যানবাহনে দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে চিৎিসা নিচ্ছেন আরও পাঁচজন। তারা সবাই নিম্নআয়ের মানুষ। সবুজের মতই তাদের দুশ্চিন্তা।
দগ্ধদের স্বজনরা জানাচ্ছেন, একে তো দুর্মূল্যের বাজারে রোজগার বন্ধ, তার ওপর চিকিৎসার খরচ তারা কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। সরকার বা কোনো সংস্থাও তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের এখানে এ পর্যন্ত ৬ জন দগ্ধ হয়ে এসেছে। পেট্রোলে দগ্ধের কারণে তাদের শরীরে ক্ষতগুলো গভীর। তারা শঙ্কামুক্ত হলেও অনেকেরই অপারেশন প্রয়োজন হচ্ছে।”
এ ইনস্টিটিউটে দগ্ধ যারা ভর্তি আছেন তারা হলেন- রিকশাচালক আব্দুল জব্বার, পোশাক শ্রমিক মাহমুদুল হাসান, পরিবহন শ্রমিক সবুজ মিয়া, মেকানিক বিপ্রজীত ভাওয়ালী, পরিবহনকর্মী শাখাওয়াত হোসেন ও বাসের হেলপার রবিউল ইসলাম রবি।
চিকিৎসক তরিকুল জানান, জব্বারের শরীরের ২০ শতাংশ, মাহমুদুলের ১১ শতাংশ, সবুজের ২৮ শতাংশ, বিপ্রজীতের ৭ শতাংশ, শাখাওয়াতের ১০ শতাংশ ও রবির ১৭ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এরপর থেকে হরতাল এবং দফায় দফায় ডাকা অবরোধে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া শুরু হয়।