রাজপথ আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। অতীতের সব আন্দোলনের মতোই হরতাল, অবরোধে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ছে। এর সঙ্গে আছে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং অনিশ্চয়তা। গ্রেপ্তার, মৃত্যু, সহিংসতা এসবই তার অন্তর্গত। এ অবস্থায় আমরা যারা শীতকালে সংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন করে থাকি, তারা একটা অনিশ্চয়তায় ভুগছি। নানান ধরনের অনুষ্ঠান এখনই বাতিল করতে হচ্ছে। এ এক অসহায় অবস্থা।
যে ভাষায় বিরোধী দল কথা বলছে, তার পাল্টাপাল্টি জবাবে সরকারও কথা বলছে। সেটা একটা রাজনৈতিক আচরণ বটে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা ভেবে দুই প্রতিপক্ষ কোনো মীমাংসায় পৌঁছাতে পারবে বলে এই মুহূর্তে সেটা মনে হচ্ছে না। তাহলে বিষয়টা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
পৃথিবীর অনেক দেশেই এ ধরনের রাজনৈতিক আন্দোলন চলে, কিন্তু তার উদ্দেশ্য একটাই—সেটা হচ্ছে একটা মীমাংসায় পৌঁছানো এবং জনজীবনকে স্বাভাবিক করে তোলা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না; বরং পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ছে। এই জটিলতার অবসান ঘটবে, সে রকম কারও কোনো সুচিন্তিত মতামত সাধারণ মানুষকে নিশ্চয়তা দিতে পারছে না।
আমাদের দেশের জনগণের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ভাষা আন্দোলন থেকে আজ অবধি নানান আন্দোলন, সংগ্রাম এমনকি সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা চলেছি। দীর্ঘ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও আমরা যুক্ত থেকেছি। যার মধ্য দিয়ে আমাদের শিল্প-সাহিত্য উন্নত হয়েছে। মানুষ আন্দোলন থেকে প্রেরণা পেয়েছে। কিন্তু আজ আন্দোলন এবং আন্দোলন বিরোধিতার মধ্যে শুধু একটিই বিষয় তা হলো, নির্বাচন এবং ক্ষমতা।