২৮ অক্টোবর ঢাকায় বড় দুটো দলের সমাবেশ হচ্ছে। তাদের মধ্যে সংঘাতমূলক পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন অনেকে। গণমাধ্যমে এ নিয়ে অনেকে যৌক্তিকভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তবে কেউ কেউ এ পরিস্থিতিকে শুধু দুই দলের ক্ষমতার লড়াই হিসেবে দেখছেন। তাঁদের মতে, এখানে জনগণ কোনো পক্ষ নয়, দুই দলের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে সাধারণ মানুষের কোনো স্বার্থ বা স্টেক নেই। কিন্তু এটি পুরোপুরি সত্যি নয়।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বিরোধ মূলত ভোটাধিকারকেন্দ্রিক। কাজেই এখানে জনগণও একটি পক্ষ, তাদেরও স্বার্থ আছে এখানে। জনগণ ভোট দিতে চায়, তার রায় জানাতে চায়, সেই রায়ের ভিত্তিতে সরকার গঠিত হোক, তা চায়। এরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ। এই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গত দুটো নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। ২০২৪ সালে ভোট দিতে না পারলে এক যুগের বেশি সময় ধরে ভোটাধিকারবঞ্চিত থাকবে তারা। কোনো দেশের মানুষ এটা চাইতে পারে না। বিশেষ করে ভোটের রায় নাকচ হওয়ার ক্ষোভ থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া একটি দেশের মানুষ।
বর্তমান সংকট তাই শুধু দুই দলের প্রতিযোগিতা নয়, এটি দুই পক্ষেরও প্রতিযোগিতা। এক পক্ষ জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চায়, আরেক পক্ষ তা চায় না। অতীতে এরশাদ বা ১৯৯৬ সালের বিএনপি অবাধ ভোটাধিকারের বিরোধী পক্ষ ছিল, দেড় দশক ধরে একই অভিযোগ রয়েছে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে। আগের সরকারগুলো একপর্যায়ে জনমতের চাপ মেনে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে পদত্যাগ করেছে। বর্তমান সরকার দু-দুটো সাজানো নির্বাচন করেও ক্ষমতায় রয়ে গেছে। জনমতের চাপ কখনো রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করে দমন করেছে, কখনো জনমতকে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ হরণ করেছে। জনগণ তার ভোটাধিকার ফেরত পায়নি।