অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত মে মাসে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর এ ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা শুরু হয়েছে বলে দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, বিচার বিভাগও মার্কিন ভিসা নীতির বিধিনিষেধের আওতায় রয়েছে। বিচার বিভাগকে এ বিধিনিষেধের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত করার বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে জাতীয় ও স্থানীয় সব ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হলো নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন এই কাজ করে থাকে মূলত প্রশাসন বা আমলাতন্ত্র এবং পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায়। নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন মনে করলে সেনা মোতায়েনেরও সুপারিশ করতে পারে। পুলিশ, প্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী নির্বাচন অনুষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকে। এগুলোর ওপর সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ থাকায় এই সংস্থাগুলোর নির্বাচন প্রভাবিত করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় এ রকম ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে এবং দেশি–বিদেশি সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশিতও হয়েছে।
নির্বাচনের সঙ্গে বিচার বিভাগ বা আদালতের সম্পর্কটা ‘পরোক্ষ’। এর মধ্যে রয়েছে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল কিংবা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের মামলায় সিদ্ধান্ত দেওয়ার মতো বিষয়। বিচার বিভাগ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হলে আদালতে এ বিষয়গুলো সঠিকভাবেই সুরাহা হবে—এটাই প্রত্যাশিত। তাহলে কেন মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় বিচার বিভাগকেও অন্তর্ভুক্ত করা হলো? কয়েকটি ঘটনার আলোকে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখা যেতে পারে।