দীর্ঘ ১০ বছর পর জামায়াতে ইসলামীকে রাজধানীতে সমাবেশ করতে দেওয়ার নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্র কলকাঠি নাড়ছে বলে মনে করেন বিশিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
তাঁর মতে, সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসক্রিপশনে জামায়াতকে রাজনীতি করতে সুযোগ দিয়েছে। এটি দেশের জন্য বুমেরাং হবে। দলটিকে নিষিদ্ধ করা না হলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না। আগামী নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে জামায়াতের কোনো ধরনের আঁতাত হলে আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগ থাকবে না; মুসলিম লীগ হয়ে যাবে। গতকাল রোববার সমকালকে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আবু সালেহ রনি।
সমকাল: প্রায় সাড়ে ১০ বছর পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে রাজধানীতে সমাবেশ করেছে একাত্তরের গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
শাহরিয়ার কবির: এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যে দলকে হাইকোর্টের রায়ে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, অর্থাৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে যার নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে, যার গঠনতন্ত্র বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যাদের গণতন্ত্রের প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই, যারা নারী-পুরুষের সমানাধিকারে বিশ্বাসী নয়, যারা মুসলিম-অমুসলিমের সমানাধিকারে বিশ্বাস করে না, যারা বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আগুন সন্ত্রাস করে দেশের অসংখ্য মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, যারা দেশে যাবতীয় জঙ্গির পৃষ্ঠপোষক, যারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে যুক্ত, সেই দলটিকে কেন সরকার হঠাৎ সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে– এটা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। আমরা মনে করি, জামায়াত মাঠে নেমেছে
আগামী নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য। গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসক্রিপশনে তাদের মাঠে নামার সুযোগ করে দিয়েছে হয়তো। কিন্তু আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন, যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে গিয়ে অতীতে যারাই
যা কিছু করেছে, তা বুমেরাং হয়েছে। একটা বিখ্যাত উক্তি প্রচলিত রয়েছে– যুক্তরাষ্ট্র যার বন্ধু, তার শত্রুর দরকার হয় না।