কণ্ঠরোধের তন্ত্র

বিডি নিউজ ২৪ চিররঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ২২:০৯

চুপ করিয়ে দেওয়া, থামিয়ে দেওয়া, কণ্ঠ রোধ করে দেওয়া মোটেও ভালো কথা নয়। কিন্তু আমাদের দেশে এই ঘটনাটিই সমাজের নানা পর্যায়ে ঘটছে। যে যেখানে শাক্তিশালী, সে-ই প্রতিপক্ষের কণ্ঠ রোধ করার ব্যাপারে মরিয়া হয়ে উঠছে। ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা তাদের পরাক্রম দেখাতে যখন কণ্ঠরোধের তন্ত্র কায়েম করেন, তখন আসলে সমাজের শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। আর শ্বাসরোধ হওয়া ব্যক্তি যে জীবন বাঁচাতে ছটফট করে, সর্বশক্তি প্রয়োগ করে বাঁচতে চায়, এটা কে না জানে? এতে করে অনিবার্য অস্থিরতাকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু এসব ব্যাপারে ভাবনা-চিন্তা করার সময় কারও আছে বলে মনে হয় না। বিশেষত দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা নিজেদের আচরণের ব্যাপারে একেবারেই বেপরোয়া। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এই বেপরোয়া ও অপরিণামদর্শী আচরণের কারণে পুরো সমাজটাই যেন রসাতলে যেতে বসেছে।


দৈনিক ‘প্রথম আলো’র সম্পাদক মতিউর রহমান ও প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার কথাটি উল্লেখ করা যায় এ প্রসঙ্গে। গত ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে পত্রিকাটিতে প্রকাশিত একটি সংবাদে একজন দিনমজুরের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে উদ্ধৃত করা হয়, “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।’’ এই উদ্ধৃতির সঙ্গে একটি শিশুর ছবি ছিল, যে গ্রিলের ফাঁক দিয়ে স্মৃতিসৌধের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। এ সংক্রান্ত ফেসবুক পোস্ট ও খবরের স্ক্রিনশট বেশ ভাইরাল হয়।


প্রতিবেদনে ওই উক্তিটি আরেক ব্যক্তির হলেও শিশুটির ছবি বিভ্রান্তি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।


পরে পত্রিকাটি পোস্ট সংশোধন করলেও এই খবরটিকে ‘মিথ্যা’ ও ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ উল্লেখ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫-এর (২), ৩১, ৩৫ ধারায় আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণ করে এবং বিভ্রান্তি ছড়াতে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে।


প্রথম আলো, প্রথম আলোর সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক, বার্তা সম্পাদক কিংবা সম্পাদক দোষী না নির্দোষ ওই আলোচনায় যাব না। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে ইতিমধ্যে অনেক মতামত প্রকাশিত হয়েছে। তবে দেশের শীর্ষ একটি পত্রিকার সম্পাদকের নামে এভাবে মামলা করা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে গ্রেফতার করার ঘটনাটি ভীষণ উদ্বেগের। শেষপর্যন্ত সম্পাদকের আগাম জামিন এবং প্রতিবেদকও জামিন পেয়েছেন। তবে এর ফলে আখেরে ক্ষতি হবে গণমাধ্যমের, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সর্বোপরি দেশের ভবিষ্যৎ সমাজের।


গণমাধ্যমে প্রকাশিত যে কোনো প্রতিবেদনের ভুল বা অসঙ্গতি থাকলে কেউ তা নিয়ে সংক্ষুব্ধ হতে পারেন এবং তা নিরসনের জন্য দেশে প্রেস কাউন্সিল আইন রয়েছে। বিদ্যমান ওই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রেস কাউন্সিল আইনকে উপেক্ষা করে সরাসরি কোনো প্রতিবেদককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে রাখার এবং সমালোচনামূলক বা ভিন্নমত প্রকাশ করলে শায়েস্তা করার অভিপ্রায়কে স্পষ্ট করে তোলে, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের নামান্তর।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us