কারও বাবা ব্যবসায়ী, কেউ সরকারি কর্মকর্তার সন্তান। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি ও উত্তরায় তাঁদের বসবাস। উচ্চশিক্ষার জন্য কেউ যুক্তরাজ্য, কেউ মালয়েশিয়া, কেউ গিয়েছিলেন ভারতে। বিদেশে থাকাকালে চিনেছেন অপ্রচলিত বিভিন্ন মাদক, কেউ কেউ তা তৈরি করার কৌশলও রপ্ত করেছেন। দেশে ফিরে এসব মাদক সেবন ও তা বিক্রির চক্র গড়ে তুলেছিলেন তাঁরা।
এই চক্রের আটজনকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) কর্মকর্তারা বলেছেন, চক্রের সদস্যরা ঢাকার অভিজাত এলাকায় বিভিন্ন ‘পার্টিতে’ মাদক সরবরাহ করে আসছিলেন। ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের কাছেই তাঁরা মাদক পৌঁছে দিতেন। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ‘অপ্রচলিত’ বিভিন্ন মাদক দেশে এনে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। শক্তিশালী মাদক ক্রিস্টাল মেথ ও আইসের পাশাপাশি কিছু দিন ধরে তাঁরা আরও ভয়ংকর নতুন একটি মাদক সরবরাহ করছিলেন। অস্ত্রোপচারের আগে রোগীকে ইঞ্জেকশন হিসেবে চেতনানাশক কেটামিন দেওয়া হয়, সেটাকে মাদকে রূপান্তর করে ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন তাঁরা।
গত ৭ থেকে ৯ ডিসেম্বর ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চার দফা অভিযান চালিয়ে চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ডিএনসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের একসময়ের সহযোগী রাসেল ওরফে ভাইস্তা রাসেল এবং তাঁর বান্ধবী রামিছা শিমরানও রয়েছেন। রামিছাকে অভিজাত এলাকার মাদকসেবী ও এই কারবারে জড়িত ব্যক্তিরা ইডেন ডি সিলভা নামে চেনেন। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন রুবায়েত আলী, নাসিম ইকবাল (অপু), সৈয়দ নওশাদ, আলভী জাবরান, প্রিন্স রহমান ও সাদী রহমান। ঢাকার ভাটারা, মোহাম্মদপুর, বনানী ও তেজগাঁও থানায় এই চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছেন ডিএনসির ঢাকা উত্তর অঞ্চলের কর্মকর্তারা।