মহান আল্লাহ তাঁর প্রতিটি সৃষ্টিতে আমাদের জন্য অসংখ্য নিদর্শন রেখেছেন। যেগুলো মুমিনের ঈমানকে আরো শক্তিশালী করে। এ জন্যই মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আমাদের তাঁর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন প্রাণীর রক্ত সঞ্চালন ও দুধ উৎপাদনের বিষয়টিই ধরা যাক, প্রাণীদেহে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াটি কিভাবে কাজ করে, রক্ত-মাংসের পশুগুলো থেকে স্বচ্ছ ও পুষ্টিকর দুধ কিভাবে বেরিয়ে আসে?
মুসলিম বিজ্ঞানী ইবনে নাফিসের ৬০০ বছর পূর্বে এবং পশ্চিমা বিশ্বে উইলিয়াম হারওয়ে কর্তৃক রক্ত চলাচলের ধারণা দেওয়ার ১০০০ বছর পূর্বে, কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল।
প্রায় ১৩০০ বছর পূর্বে এটা জানা ছিল যে অন্ত্রে কি ঘটে এবং বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় খাদ্যের বিভিন্ন উপাদান শোষিত হয়ে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পুষ্টি সাধন করে। কোরআনের একটি আয়াত দুধের উপাদানের উৎস সম্পর্কে বর্ণনা করে, যা এ মতবাদগুলোর সঙ্গে পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ওপরের মতগুলোর ব্যাপারে কোরআনের আয়াত বোঝাতে হলে, এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ যে অন্ত্রনালিতে কী কী রাসায়নিক প্রক্রিয়া ঘটে এবং সেখান থেকে অর্থাৎ খাদ্যের নির্যাস কী করে একটি জটিল প্রক্রিয়ায় রক্তে প্রবাহিত হয়। কখনো কখনো তা রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে লিভারের মাধ্যমে রক্তে প্রবাহিত হয়। রক্ত সেগুলোকে শরীরের প্রত্যেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সরবরাহ করে, যার মধ্যে দুধ উৎপাদনকারী লালাগ্রন্থিও অন্তর্ভুক্ত। সহজ কথায়, অন্ত্রনালির কিছু বিশেষ ধরনের নির্যাস অন্ত্রের আবরণের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসে এবং এ নির্যাসগুলো রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পৌঁছায়।
যদি আমরা কোরআনের নিম্নলিখিত আয়াতটির মর্মার্থ বুঝতে চাই, তাহলে উল্লিখিত ধারণাটির যথার্থ মূল্যায়ন করা যায়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তুসমূহের মধ্যে চিন্তা করার বিষয় রয়েছে। আমি তোমাদের পান করাই তাদের উদরাস্থিত বস্তুসমূহের মধ্য থেকে গোবর ও রক্ত নিঃসৃত দুধ, যা পানকারীদের জন্য উপকারী। ’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৬৬)