‘আইন সবার জন্য সমান’ এবং ‘আইনের কাজ অন্যায়ের প্রতিকার করা’—এগুলো বহুল প্রচলিত কথা। তবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় এ কথাগুলো কতটুকু সত্য, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সাম্প্রতিক একটি ঘটনা আবারও এমন ধারণা দিল যে আইন সবার জন্য সমান তো নয়ই, বরং কখনো কখনো তা ‘হামলাকারীর’ পক্ষেও থাকতে পারে।
তিন বছর আগে সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নির্মম নির্যাতনে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ নিহত হয়েছিলেন। তাঁর স্মরণে ৭ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্মরণসভার আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সেই স্মরণসভায় হামলা করে ছাত্রলীগ। হামলায় ছাত্র অধিকারের অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। হামলার পর ছাত্র অধিকারের আহত নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে পুলিশের সামনেই আবার ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের মারধর ও হেনস্তা করে ছাত্রলীগ। কিন্তু পুলিশ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের থামাতে কিছু তো করেইনি, বরং ছাত্র অধিকারের ২৪ নেতা-কর্মীকে গাড়িতে তুলে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসে।
এর পরদিন (৮ অক্টোবর) ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের নামে দুটি মামলা করেন ছাত্রলীগের দুই নেতা। ওই দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সেদিনই ছাত্র অধিকার পরিষদের আটক নেতা-কর্মীদের আদালতে পাঠায় শাহবাগ থানার পুলিশ। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বিচারক শহীদুল ইসলাম তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ছাত্র অধিকারের ২৪ নেতা-কর্মীর জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল ১১ অক্টোবর। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বিচারক মাহাবুব আহমেদ তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। দুই মামলায় পরিষদের ২৪ নেতা-কর্মীর প্রত্যেককে ৭ দিন করে ১৪ দিন রিমান্ডে নিতে ১৩ অক্টোবর আদালতে আবেদন করে শাহবাগ থানার পুলিশ। ২০ অক্টোবর শুনানির পর ওই দিন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূরের আদালত একটি মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আকতার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেনের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আরেক মামলায় রিমান্ড শুনানির তারিখ পিছিয়ে ২৫ অক্টোবর ধার্য করা হয়েছে।