১. মুজিবনগর সরকার, ১৯ জুলাই ১৯৭১
প্রথম বাজেটটি দিয়েছিল মুজিবনগর সরকার। তখন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এম মনসুর আলী। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এর অনুমোদন দিয়েছিলেন। সেই বাজেটের ব্যাখ্যামূলক টীকায় বলা ছিল, ‘আমাদের এখন স্বাধীনতাযুদ্ধের জন্য দরকারি, অপরিহার্য ব্যয় মেটাতে বাজেট তৈরি করতে হচ্ছে। যেটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুদ্ধ প্রক্রিয়ায় সাহায্য করবে। বাজেট জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৭১—এই তিন মাস সময়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই আশায় এটা করা হয়েছে যে আমরা এই সময়ের মধ্যেই দেশকে স্বাধীন করতে পারব। অধিকাংশ সংগঠন সম্প্রতি স্থাপিত হয়েছে অথবা স্থাপিত হচ্ছে বিধায় বাজেট বরাদ্দ তৈরি করা হয়েছে কোন বাস্তব (নিরীক্ষা) ব্যতিরেকে।’ সেই বাজেটে আয় ধরা হয়েছিল ৭ কোটি ৭৪ লাখ ১৮ হাজার ৯৯৮ টাকা, ব্যয় ধরা হয় ৮ কোটি ৬২ লাখ ৪৮ হাজার ২০৪ টাকা। ফলে বাজেট ঘাটতি ছিল ৮৮ লাখ, ২৯ হাজার ২০৬ টাকা।
২. তাজউদ্দীন আহমদ, ৩০ জুন ১৯৭২
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ একই সঙ্গে দুটি অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছিলেন। ১৯৭১-৭২ সালের বাজেটটি ছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ের। এ নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর থেকে আমরা বাংলাদেশের সম্পূর্ণ এলাকার কার্যক্ষম প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছি। তার আগে মুজিব নগরস্থিত বাংলাদেশ সরকার তখনকার অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক অনুমোদিত বাজেটের ভিত্তিতে সরকারের আর্থিক বিষয়াদির তত্ত্বাবধান করেছেন।’ আর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বাজেটের শুরু ছিল ১ জুলাই ১৯৭২ সাল থেকে, শেষ ৩০ জুন ১৯৭৩। এ নিয়ে তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘১৯৭১-৭২ ও ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বাজেট মূলত পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন-ধর্মী। তবে সেই সঙ্গে শুরুতেই যাতে ভবিষ্যৎ শোষণহীন, সমাজতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি স্থাপিত হতে পারে, সেই কথা স্মরণে রেখেই আমরা অগ্রসর হয়েছি।’