দেশ থেকে উধাও করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা। সবকিছুই এখন স্বাভাবিক। এ সুযোগে রাজনীতিও ফিরেছে পুরোনো রূপে। বিগত দুই বছর পর ঈদকেন্দ্রিক রাজনীতি এবার জমজমাট। বিশেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এলাকামুখী হচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী, এমপিসহ মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। বসে নেই বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
নিজ নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। দিচ্ছেন ঈদ উপহার। ইফতার পার্টি, গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, চা-চক্রসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়ছে ঈদের শুভেচ্ছা সংবলিত পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন।
নিজেকে জানান দিতে ব্যবহার করছেন ডিজিটাল প্ল্যাটফরমও। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দাঁড়াচ্ছেন গরিব ও অসহায় মানুষের পাশে। ইতোমধ্যে অনেকে নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে জাকাতের কাপড়, নগদ টাকাসহ ঈদসামগ্রী তুলে দিয়েছেন দুস্থদের হাতে। কেউ কেউ প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তা পাঠিয়ে দিয়েছেন।
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যারা এলাকায় ঈদ করেননি, তারাও এবার বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনেকে ইতোমধ্যে নিজ এলাকায় ঘুরে এসেছেন। ঈদের ছুটিতে আবারও যাবেন। এজন্য এলাকার প্রবেশমুখ বা বিমানবন্দর না হয় রেলস্টেশনে নেতাকে যাতে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানানো হয়, তা স্থানীয় নেতাকর্মীদের আগাম বলে দেওয়া হচ্ছে। নেতার গাড়ির সামনে-পেছনে যেন মোটরসাইকেল এবং ট্রাকবহর থাকে, সে ব্যবস্থা করতে বলা হচ্ছে।
নেতার আগমন নিয়ে ঈদের সময় এলাকায় মানুষের মুখে মুখে যেন আলোচনা থাকে, সে কারণে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় বসেই এসব পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে দিচ্ছেন অনেক নেতা। এজন্য স্থানীয় নেতাকর্মীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও থাকছে বলে জানা গেছে। তবে দীর্ঘদিন নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের খোঁজখবর না নেওয়ায় হঠাৎ মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তৎপরতা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, এতদিন তারা কোথায় ছিলেন। করোনায় মানুষের কাজকর্ম বন্ধ ছিল। অনেকে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে। চরম দুঃসময়ে নেতাদের কেউ কাছে পায়নি। এমনকি তারা নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ফোনও রিসিভ করেনি। সেই নেতারা হঠাৎ করে এমন দরদি হয়ে গেলেন।