গত কয়েকদিন জুড়ে আমরা দেখছি এবং শুনছি কি করে অভিযান-১০ লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে ঝালকাঠির গাবখানের কাছাকাছি সুগন্ধা নদীতে পানির ওপর থাকা অবস্থায় ভয়াবহ আগুনে পুড়েছে। প্রায় ৪১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, আহত হয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক। নিখোঁজের সংখ্যা জানা নাই। মৃত্যুর সংখ্যা পরে আরও বেড়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ২৪ ডিসেম্বর ভোর রাত ৩টার পর, তখন যাত্রীদের অধিকাংশ ঘুম ছিল। তারা ভাবতেও পারেননি যে তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর আর সম্ভাবনা নেই। আগুন টের পাওয়ার পর প্রাণ বাঁচানোর জন্যে কতভাবে চেষ্টা হয়েছে তা বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের কাছ থেকে যা শোনা গেছে শিউরে ওঠার মতো।
পানিতে লাফ দিলে সাঁতরে উঠতে না পারার অনিশ্চয়তা আর ডেকে থাকলে পুড়ে যাওয়া – এই দুই হিসাবের মধ্যে সকলে সফল হতে পারেননি। নিজে একা লাফ দিলে তো হচ্ছে সাথে শিশুটি রয়েছে। তাকেও নিতে হবে। এভাবে পরিবারের সদস্যরা একে অপরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। মায়েরা সন্তানকে ধরে রাখতে পারেননি; স্বামী বেঁচে গেলেও স্ত্রীকে হারাতে হয়েছে। আমরা জানি যে কোনো দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুর নিহত হওয়ার সংখ্যা বেশি থাকে। এখানেও তাই হয়েছে নিশ্চয়ই, যদিও কোনো গণমাধ্যমে নারী-পুরুষ আলাদা করে সংখ্যা দেয়া হয়নি।