বরগুনার মোল্লার হোরা গ্রামের সুমন সরদার সংসারে এখন একা। তাঁর স্ত্রী-সন্তান সবাই নিখোঁজ। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠিতে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ আগুনে হারিয়ে গেছে স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৩৫), মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মিম (১৫) ও সুমনা আক্তার তানিশা (১২) এবং শ্যালক জনির ছেলে জুনায়েদ (৮)। খুঁজে না পেয়ে সুমন মেনে নিয়েছেন, পরিচয় শনাক্ত না হওয়া লাশের ভিড়েই আছে তাঁর প্রিয়জনরা।
সুমনের মতো প্রিয়জনের পরিচয়ের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ৩২টি পরিবার। তবে সর্বশেষ তথ্য হলো—ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ১৫ জনের পরিচয় জানা গেছে। অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এই তথ্য নিশ্চিত করলেও তাদের নাম-পরিচয় জানাতে রাজি হয়নি। স্থানীয় জেলা প্রশাসন পরিচয় প্রকাশ করবে জানিয়ে সিআইডি বলেছে, অশনাক্ত বাকিদেরও শনাক্ত করার কাজ চলছে।
অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনের পাঁচ মাস পার হয়েছে। কিন্তু এই পরিবারগুলোর অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না। ওই লঞ্চে আগুনের ঘটনায় মারা যায় ৪৯ জন। সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বানকিম মজুমদার নামে আহত এক শিক্ষক মারা যান। তিনিসহ ২৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ২৩টি লাশ পুড়ে বিকৃত হওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তাদের বরগুনায় গণকবর দেওয়া হয়। নদী থেকে উদ্ধারের পর অজ্ঞাতপরিচয় একজনকে সনাতন ধর্মাবলম্বী ধারণা করে ঝালকাঠির পৌর মহাশ্মশানে সমাহিত করা হয়।