ঝালকাঠিতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনায় লঞ্চটির ফিটনেস পরীক্ষাকারী শিপ সার্ভেয়ারসহ নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডাব্লিউটিএর চার কর্মকর্তা এবং চার মালিকসহ ১২ জনকে দায়ী করেছে নাগরিক তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে—শুধু মালিক, মাস্টার ও ড্রাইভারের শাস্তি নয়, দায়ী সবাইকে শাস্তির আওতায় না আনলে দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রবণতা বেড়ে যাবে এবং দুর্ঘটনাও কমবে না।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে নৌদুর্ঘটনা রোধে ২৫ দফা সুপারিশসহ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলন, নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনসহ ১৬টি সামাজিক সংগঠন এই নাগরিক তদন্ত করেছে।
গত ৪ জানুয়ারি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিদের নিয়ে ১৯ সদস্যের নাগরিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দেশে কোনো নৌদুর্ঘটনার পর এ রকম নাগরিক তদন্ত কমিটি গঠন এটাই প্রথম।
প্রতিবেদনে দায়ীরা হলেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ঢাকা (সদরঘাট) কার্যালয়ের প্রকৌশলী ও জাহাজ জরিপকারক মাহবুবুর রশীদ ও পরিদর্শক হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন ও পরিদর্শক দীনেশ দাস, লঞ্চটির চার মালিক হামজালাল শেখ, শামীম আহম্মেদ, রাসেল আহাম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি; প্রথম শ্রেণির মাস্টার রিয়াজ সিকদার ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার খলিলুর রহমান এবং প্রথম শ্রেণির ড্রাইভার মাসুম বিল্লাহ ও দ্বিতীয় শ্রেণির ড্রাইভার আবুল কালাম।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবকাঠামো ও কারিগরি বিষয়ে সার্বিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই চলাচলের যোগ্য মর্মে মতামত দেওয়ায় এবং দীর্ঘদিন বন্ধের পর পুনরায় চলাচলের সময় লঞ্চটি পরীক্ষা না করায় নৌ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট জরিপকারক এবং যাত্রার আগে লঞ্চটি পরিদর্শন না করে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ইঞ্জিন পরিবর্তনের বিষয়টি না জানিয়ে একই সংস্থার পরিদর্শক দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।