শামসুন্নাহার রহমান পরাণ ১৯৪০ সালে ১লা জুন চট্টগ্রামের এনায়েতবাজারস্থ মাতুতালয় ”মায়া কুটিরে” জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর মা মরহুমা সাজেদা খাতুন এবং বাবা মরহুম মৌলভী আমির হোসেন মজুমদার। কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার জগন্নাথ দিঘী ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত সূফি পরিবারের সন্তান তিনি। বাবা ছিলেন তৎকালীন ঋণ সালিশী বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সম্মানিত জুরি বোর্ডের সদস্য। ব্য একমাত্র ছেলে আফতাবুর রহমান জাফরী জাতীয় পর্যায়ের বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা “ঘাসফুল” এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। মেজমেয়ে ইয়াসমীন আহমেদ একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। সেজমেয়ে শামীম রহমান রুবা আমেরিকা প্রবাসী এবং ছোট মেয়ে ঝুমা রহমান শিক্ষকতা পেশায় জড়িত রয়েছেন । অপর্ণাচরণ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাও একই স্কুলে সম্পন্ন করেন। শামসুন্নাহার রহমান পরাণ চার সন্তান নিয়ে প্রাইভেটে ম্যাট্রিক পাশ করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুকাল এমএ.পড়ার সময়ে প্রথম সিন্ডিকেটের তিনি ছাত্র-প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেন। পরাণ রহমান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন এর সেডপা (সিইডিপিএ) থেকে ব্যবস্থাপনায় ডিপ্লোমা ডিগ্রি গ্রহণ করেন, যা তাঁর জীবনে ঘাসফুল এর প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনে বড়দের সাথে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। শামসুন্নাহার রহমান পরাণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিকালে চট্টগ্রামে বন্দুক চালনা ও ফাষ্ট-এইড প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। এবং তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক ছিলেন। তার দুই ভাই বীরপ্রতিক মেজর জেনারেল সায়ীদ আহমেদ বিপি, অপরজন যুদ্ধাহত আবুল কাশেম মজুমদার মুক্তিযোদ্ধা। শামসুন্নাহার রহমান পরাণ মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে স্ব-প্রণোদিত হয়ে সমাজসেবায় আত্মনিয়োগ করেন। সমাজসেবা এবং নারী উন্নয়নের মহান ব্রত নিয়ে তিনি স্বাধীনত্তোর যুদ্ধ বিধস্থ দেশে চট্টগ্রামে প্রথম রেজিস্টার্ড এনজিও ‘ঘাসফুল’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৫ সালে এই মহিষসী নারী মৃত্যুবরণ করেন।