আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ২২শে মে। বিক্রি চলবে ২৬শে মে পর্যন্ত। গতকাল রেলভবনে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলওয়ের প্রস্তুতি বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। এ ছাড়া রেলের ফিরতি টিকিট বিক্রি ২৯শে মে শুরু হয়ে ২রা জুন পর্যন্ত চলবে বলেও জানান রেলপথমন্ত্রী। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ বা ৬ই জুন দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে। তবে আগামী ৫ই জুন ঈদ ধরে রেলওয়ের কর্মপরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ঈদের সময় মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারে এবং ঈদ শেষে ঢাকায় নিরাপদে ফিরতে পারে সে জন্য আমরা কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। যারা ২২শে মে টিকিট সংগ্রহ করবেন তারা ৩১শে মে, যারা ২৩শে মে সংগ্রহ করবেন তারা ১লা জুন, যারা ২৪শে মে টিকিট সংগ্রহ করবেন তারা ২রা জুন, যারা ২৫শে মে সংগ্রহ করবেন তারা ৩রা জুন ভ্রমণ, যারা ২৬শে মে টিকিট সংগ্রহ করবেন তারা ৪ঠা জুন ভ্রমণের সুযোগ পাবেন বলে জানান রেলপথমন্ত্রী। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবার পাঁচটি স্থান থেকে রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে রেলপথমন্ত্রী বলেন, ঈদ উদযাপন উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের অগ্রিম টিকিট কমলাপুর স্টেশন, বিমানবন্দর স্টেশন, বনানী স্টেশন, তেজগাঁও স্টেশন এবং ফুলবাড়িয়া স্টেশন থেকে বিক্রি হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা টিকিট বিক্রি চলবে। মন্ত্রী বলেন, ঈদ শেষে ফিরতি টিকিটের ক্ষেত্রে যারা ২৯শে মে টিকিট সংগ্রহ করবেন তারা ৭ই জুন, যারা ৩০শে মে টিকিট সংগ্রহ করবেন তারা ৮ই জুন, যারা ৩১শে মে টিকিট সংগ্রহ করবেন তারা ৯ই জুন, যারা ১লা জুন টিকিট সংগ্রহ করবেন তারা ১০ জুন, যারা ২রা জুন টিকিট সংগ্রহ করবেন তারা ১১ই জুন ভ্রমণ করতে পারবেন। একজন যাত্রী চারটির বেশি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন না। মন্ত্রী বলেন, ঈদের অগ্রিম বিক্রিত টিকিট ফেরত নেয়া হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। তিনি বলেন, যাত্রীরা ৫০শতাংশ টিকিট অনলাইনে অ্যাপের মাধ্যমে কিনতে পারবেন। স্টেশন কাউন্টার থেকে ৫০ শতাংশ টিকিট অগ্রিম কিনতে পারবেন। অনলাইনে ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি না হলে অবিক্রিত টিকিট কাউন্টার থেকে দেয়া হবে। ঈদের ১০ দিন আগে এবং পরের ১০ দিন ট্রেনে ভিআইপিদের জন্য সেলুন সংযোজন করা হবে না। আগামী ৩রা ও ৪ঠা জুন ঢাকা-কলকাতা-ঢাকার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করবে না বলেও জানান রেলপথমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রেলে প্রতিদিন গড়ে আড়াই লাখ মানুষ চলাচল করলেও ঈদের সময় তা প্রায় ৩ লাখ হয়ে যায়।সাপ্তাহিক ছুটিতেও চলবে আন্তঃনগর ট্রেন: ঈদুল ফিতরের পাঁচদিন আগে ৩১শে মে থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও চলাচল করবে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ছুটি প্রত্যাহারের কারণে পূর্ব ও পশ্চিম মিলে প্রায় ৪৮টি ট্রেন বিশেষ ট্রিপ হিসেবে পরিচালিত হবে। ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ঈদের ৩ দিন আগে থেকে কন্টেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া কোনো পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।কালোবাজারি প্রতিহত করা হবে: নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে সব বড় বড় স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি, বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ এবং র্যাবের সহযোগিতায় সার্বক্ষণিক প্রহরার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন, রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ( রোলিং স্টক) মো. শাসছুজ্জামানস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।