বিগত সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির চার মাস অতিবাহিত হলো। ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল যুগান্তকারী গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। বৈষম্যের প্রাচীর ভেঙে সমতার নতুন বাংলাদেশ উপহারে গৃহীত সরকারের সংস্কার উদ্যোগ দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে। ধর্ম-বর্ণ-দল-মত নির্বিশেষে কার্যকর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অক্ষুণ্ন রাখার উদ্দেশ্যে সরকার ও জনগণের সর্বাত্মক প্রয়াস লক্ষণীয়। যে কোনো রাষ্ট্রে বিপ্লব বা অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি পরিলক্ষিত হয়। বর্তমান বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, সরকার পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে অতীতের দুর্বৃত্তায়ন নতুন রূপ পরিগ্রহ করে। দুর্বৃত্তদের ভূমিকা কিছু সময় স্তিমিত থাকলেও স্বল্প সময়ের মধ্যেই তাদের বেপরোয়া আচরণে জনগণ আতঙ্কিত। চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, লুটপাট, চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি, মামলা-হামলা ইত্যাদি কারণে মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
একই সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারাও দৃশ্যমান। দেশ ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলে পরিবেশ অস্থিতিশীল করার অশুভ তৎপরতা লক্ষণীয়। দেশবিরোধী চক্রান্তকারীরা বৈশ্বিক যোগসাজশে সংখ্যালঘু আক্রান্তের বিষয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তুচ্ছ বিষয়কে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপনের মাধ্যমে নৈরাজ্যের দৃশ্যপট তৈরির বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বহু আগে থেকেই এ ধরনের কর্মকাণ্ডের দৃষ্টান্ত রয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত অপপ্রচার পরিত্যাজ্য হলেও কিছু দায়িত্বহীন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এসব প্রচারণায় সক্রিয় থাকে। জনগণ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করাই এর উদ্দেশ্য। কোনো বিচার-বিশ্লেষণ, যাচাই-বাছাই না করে মিথ্যার আশ্রয়ে অপকর্মে জড়িত হওয়া দুর্বৃত্তদের প্রধান কর্তব্যরূপে পরিগণিত।