ভারত-চীন সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে কি

প্রথম আলো শশী থারুর প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৫৫

২০২০ সালের জুনে ভারতের লাদাখ সীমান্ত এলাকায় চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হন। এই সংঘর্ষ দুই দেশের সম্পর্ককে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ঠেলে দেয় এবং দীর্ঘস্থায়ী সামরিক উত্তেজনার সূচনা করে। এখন চীন ও ভারত একটি আপস চুক্তিতে পৌঁছেছে।  


২০২০ সালের সহিংসতার পর থেকে ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছিল, সীমান্তে আগের অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থিতাবস্থায় থাকবে। ভারত চীনের প্রতি কঠোর অবস্থানে থাকার যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিল, তাতে অনড় থাকার প্রমাণ হিসেবে ভারত চীনা বিনিয়োগের অনুমোদন ধীর করে দিয়েছে; চীনা নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল বাতিল করেছে। এ ছাড়া ভারত চীনের প্রশান্ত মহাসাগরীয় ভূখণ্ডের দাবির বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব নিয়েছে। ভারত এমন কিছু রাজনৈতিক মনোভঙ্গি প্রকাশ করেছে, যা চীনকে অসন্তুষ্ট করতে পারে। 


চীন ও ভারতের সাম্প্রতিক আপস চুক্তি ইঙ্গিত দেয়, বেইজিং শেষ পর্যন্ত দিল্লির বার্তাটি বুঝতে পেরেছে। আদতে ভারতের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানত বিশ্বাস করে, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কৌশল খুব বেশি কাজে দেবে না। সে কারণে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কৌশল বাদ দিয়ে ভারতের চীনা পুঁজির ব্যবহার করা এবং তার মাধ্যমে ভারতের নিজস্ব বিনিয়োগের ঘাটতি পূরণ করা উচিত। যেহেতু রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাই এটি মোটেও আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, ভারতের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় চীনের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করতে মোদি সরকারের ওপরে চাপ দিচ্ছে। 


গত জুলাই মাসে ভারত সরকারের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা প্রকাশ্যে এমন একটি কৌশলের পক্ষে কথা বলেন, যা ভারতে চীনা বিনিয়োগ বাড়াবে এবং ভারতকে চীনা সরবরাহ শৃঙ্খলের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে যুক্ত করবে। গত কয়েক মাসে এমন কিছু ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যাতে মনে হয়েছে, লাদাখে চলমান অচলাবস্থা অবসানের জন্য একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। 



১২ সেপ্টেম্বর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মন্তব্য করেন, পূর্ব লাদাখে এলএসি (লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল) বরাবর চীনের সঙ্গে ‘বিচ্ছিন্নতা’ সমস্যার প্রায় ৭৫ শতাংশ সমাধান করা হয়েছে। একই দিন, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সেন্ট পিটার্সবার্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিশনের পরিচালক ওয়াং ই-এর সঙ্গে দেখা করেন। তখন এই চুক্তির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। 


তবে আপস-মীমাংসামূলক একটি চুক্তি হলেও বেশ কিছু গুরুতর উদ্বেগের বিষয় এখনো রয়ে গেছে। প্রথমত, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ব্রহ্ম চেলানির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, চুক্তি ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং কাজানে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে মিলিত হন, তঁাদের মন্ত্রণালয়গুলো একেবারেই ভিন্ন বিবৃতি প্রকাশ করে। ভারত যেখানে এই চুক্তিকে ‘বহু-মেরুর এশিয়া এবং বহু-মেরুর বিশ্বের’ দিকে একটি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে, চীন সেখানে এটিকে কেবল ‘বহু মেরুর বিশ্বের’ চুক্তি বলে উল্লেখ করে। চীনের এই কথায় সূক্ষ্ম কিন্তু স্পষ্ট যে ইঙ্গিত ছিল, তা হলো এশিয়া চীনের দখলে আছে। 


এলএসি বরাবর চীনের কার্যকলাপ স্পষ্টভাবে বোঝায়, তারা ভারতে অস্থিতিশীলতা জিইয়ে রাখতে চায়। তারা সীমান্ত পরিবর্তনের এমন সব পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা চীনের স্বার্থের পক্ষে যায়। 


ভুটানের দোকলাম মালভূমি নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে শেষ সংঘর্ষ কীভাবে শেষ হয়েছিল, তা আমাদের মনে রাখতে হবে। ভারত দোকলামের মালিকানা দাবি করে না; তবে ভুটানের দাবিকে সমর্থন করে। ভুটানের এই দাবিকে চীন আবার প্রত্যাখ্যান করে। 


একটি গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় মহাসড়ক দোকলাম মালভূমির নিচ দিয়ে চলে গেছে। এই মহাসড়ক ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। তাই যখন চীন দোকলামে একটি চীনা মহাসড়ক নির্মাণের জন্য সৈন্য মোতায়েন করেছিল, ভারত তখন সেনা পাঠিয়ে প্রকল্পটি বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল। সর্বশেষ সই করা লাদাখ চুক্তির মতো সে সময় দোকলাম সংক্রান্ত বিবাদ মেটানোর জন্য দুই পক্ষ কয়েক মাসের মধ্যেই একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল। এরপর চীনা সেনাবাহিনী দোকলামের অন্য জায়গায় সড়ক নির্মাণ করে। বর্তমানে চীনা সেনারা সেখান থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় সড়কের ওপরে নজর রাখে। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us