নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে কেন স্বস্তি নেই

প্রথম আলো কল্লোল মোস্তফা প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৫০

যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাতে নিম্নবিত্ত ও শ্রমজীবী মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। গণ–অভ্যুত্থানে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের এক উল্ল্যেখযোগ্য অংশ ছিলেন শ্রমজীবী ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্য। কাজেই এই অভ্যুত্থানের মধ্যে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ দায়িত্ব হলো, শ্রমজীবী সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিরুদ্ধে চলমান অর্থনৈতিক বৈষম্য ও নিপীড়নের অবসান ঘটানো; তাঁদের জীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তি আনার চেষ্টা করা। 


অন্তর্বতী সরকার শ্রম খাত সংস্কার কমিশন গঠন, পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি পুনর্বিবেচনা ও শ্রম আইন সংশোধনের মতো ইতিবাচক কতকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকার এমন কিছু তৎপরতা চালিয়েছে, যেগুলোর মধ্যে ‘এলিট বায়াস’ বা অভিজাত শ্রেণির দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষ করে পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলন মোকাবিলা, ফুটপাতের হকার উচ্ছেদ ও ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণে সরকারের আচরণকে ঠিক শ্রমজীবী ও নিম্নবিত্তবান্ধব বলা যাবে না। সেই সঙ্গে রয়েছে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা।


দীর্ঘ স্বৈরশাসনকালে নিপীড়ক রাষ্ট্রযন্ত্র ও পোশাক কারখানার মালিকদের শোষণ ও নিপীড়নে বঞ্চিত পোশাকশ্রমিকেরা যখন তাঁদের বঞ্চনা নিরসনের দাবিতে রাস্তায় নেমে এলেন, তখন এই আন্দোলনকে আওয়ামী লীগ ও বিদেশি ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে দমন করার চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ শ্রমিকদের দাবিগুলো ছিল সুনির্দিষ্ট কিছু অধিকারকে কেন্দ্র করে, যেগুলোকে অযৌক্তিক বলার কোনো সুযোগ নেই। 


এসব দাবির মধ্যে ছিল বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশ থেকে বাড়ানো, প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু, ১৫ দিন পিতৃত্বকালীন ছুটি, টিফিন বিল ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা, হাজিরা বোনাস বৃদ্ধি, মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে ৬ মাস করা, মোট বেতনের সমান ঈদ বোনাস দেওয়া, ছুটি বৃদ্ধি করা এবং মাস শেষে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে মজুরি প্রদান ইত্যাদি।



দমন–পীড়ন করে পোশাকশ্রমিকদের এসব দাবি আদায়ের আন্দোলন মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে গত ২৪ সেপ্টেম্বর পোশাকশ্রমিকদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার ও মালিকপক্ষ ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এর মধ্য দিয়ে পোশাক খাতের পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত হয়ে আসে। এটা প্রমাণ করে যেকোনো ষড়যন্ত্র বা উসকানি নয়, অধিকারের দাবিতেই শ্রমিকেরা রাস্তায় নেমেছিলেন। 


১৮ দফার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুসারে ১০ অক্টোবরের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধ করার কথা থাকলেও দেখা গেল, কোনো কোনো পোশাক কারখানার মালিক ওই সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করেননি। ফলে শ্রমিকদের আবার রাস্তায় নামতে হয়। দেখা গেল, অন্তর্বর্তী সরকার মালিকপক্ষকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বকেয়া পরিশোধে বাধ্য করতে পারছে না; বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলন থামানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।


এ রকম একটি পরিস্থিতিতেই মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে নিরুপায় হয়ে বিক্ষোভে নামা জেনারেশন নেক্সট কারখানার শ্রমিকদের ওপর গত ২৩ অক্টোবর গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুলিতে আহত হয়ে ২৫ বছর বয়সী পোশাকশ্রমিক চম্পা খাতুন ২৭ অক্টোবর মারা যান।


এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর ১৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ম্যাঙ্গোটেক্স কারখানার শ্রমিক কাউসার আহমেদ খান (২৬)। ৩১ অক্টোবর কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মিরপুরের ক্রিয়েটিভ ডিজাইনার্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে আহত হয় ঝুমা আক্তার (১৫) ও আল আমিন হোসেন (১৭)। অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক বিভিন্ন আন্দোলনকে ‘ষড়যন্ত্রের চশমা’ দিয়ে দেখার কারণে এবং গণমানুষের সংকটের সঙ্গে তাদের বিচ্ছিন্নতার কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলো ঘটেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us