শেখ হাসিনা ভারতে। তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ভারতে; ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় আমেরিকায়; বোন শেখ রেহানা হয় ভারতে নয়তো যুক্তরাজ্যে (তাঁর অবস্থান পরিষ্কার নয়) ; শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি বাংলাদেশের বাইরে (তবে কোথায় তা অজানা) ; রেহানার বড় মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ও ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী যুক্তরাজ্যে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসেরের পাঁচ ছেলের মধ্যে শেখ হেলাল ও শেখ জুয়েল গত সংসদেও সদস্য ছিলেন। শেখ হেলালের ছেলে শেখ তন্ময়ও গত দুই সংসদের সদস্য ছিলেন। হেলাল ও তাঁর ছেলে তন্ময় এখন ভারতে। হেলালের অন্য ভাইয়েরা শেখ জুয়েল, শেখ সোহেল, শেখ রুবেল ও শেখ বেলাল (দেশে বা দেশের বাইরে) আত্মগোপনে আছেন।
শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিম; শেখ সেলিমের দুই ছেলে শেখ ফজলে ফাহিম ও শেখ ফজলে নাইম আত্মগোপনে; শেখ সেলিমের ভাই শেখ ফজলুল হক মনির এক ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস সরকার পতনের দুই দিন আগে সিঙ্গাপুর হয়ে দেশ ছেড়েছেন; তাপসের ভাই শেখ ফজলে শামস পরশও দেশের বাইরে।
শেখ সেলিমের ছোট ভাই শেখ মারুফ সিঙ্গাপুরে, শেখ সেলিমের ভগ্নিপতি যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীও আত্মগোপনে; শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ ভারতে; তাঁর ছেলে সাদিক আবদুল্লাহ ও ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহও কোথায় আছেন, তা জানা যাচ্ছে না।
তবে যদ্দুর জানা যাচ্ছে, শেখ পরিবারের সদস্যদের অধিকাংশ দেশের বাইরে আছেন। নিরাপদ আছেন। ভালো আছেন।
আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের এক সময়কার প্রচণ্ড প্রভাবশালী যেসব নেতা রাজপথ দখলে রাখতেন, মাঝে মাঝেই ‘খেলা হবে’ বলে হুমকি ধামকি দিতেন, তাদেরও বেশির ভাগ নেতা দেশের বাইরে আছেন। নিরাপদ আছেন। ভালো আছেন।
৫ আগস্টের পর এই নেতারা প্রকাশ্যে নিজেদের চেহারা দেখাতে চাননি। হয়তো সে কারণেই তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিজেদের উপস্থিতির জানান দেন না।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের যে নেতারা ১৫ বছর ধরে মাঠ দখলে রেখেছিলেন, কিন্তু নানা কারণে সরকার পতনের পর দেশ ছেড়ে পালাতে পারেননি, তাঁরা এখন মহাবিপদে।
একদিকে, নানা মামলায় জড়ানোর কারণে পুলিশ তাঁদের খুঁজছে; অন্যদিকে, এক সময় তাঁদের হাতে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হওয়া ভুক্তভোগী লোক এবং বিএনপি, জামায়াতসহ প্রতিপক্ষের লোকজনের সামনে পড়লেই তাঁদের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে।
মোদ্দা কথা, আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশকে এখন পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। লোকজনের কাছে নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা বা কর্মী পরিচয় দেওয়াই এখন তাঁদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।
তো, এই রকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে আওয়ামী লীগ তাদের ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ নভেম্বর (আজ রোববার) জিরো পয়েন্টে আসার ডাক’ দিয়েছে।