লাক্স তারকা ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী কুসুম শিকদার। ক্যারিয়ারে অল্প কাজ থাকলেও অভিনয় প্রতিভা দিয়ে দ্যুতি ছড়িয়েছেন দর্শকমহলে। অভিনয়ের বাইরে গানও করেন এ তারকা। দীর্ঘ বিরতির পর নতুন পরিচয়ে সিনেমায় ফিরেছেন তিনি। ২০১৭ সালে প্রকাশিত তার লেখা ‘অজাগতিক ছায়া’ গল্পগ্রন্থ থেকে ‘শরতের জবা’ গল্পে সিনেমাটি নির্মাণ করে দর্শক প্রশংসা পাচ্ছেন এ অভিনেত্রী। শরতের জবা সিনেমা ও অন্যান্য বিষয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে।
এ মূহূর্তে শরতের জবার কী খবর?
কুসুম শিকদার : শরতের জবা মুক্তির চতুর্থ সপ্তাহ চলছে। এখনো ব্লক বাস্টারে আছে। হলের পরে আমরা ওটিটিতে যাব। তবে সেটা এখনো পরিকল্পনা হয়নি।
শরতের জবার পোস্ট প্রডাকশনে দীর্ঘ সময় নিয়েছেন, এটি দেশে করার কারণ কী?
কুসুম শিকদার : এক বছর সময় নিয়ে পোস্ট প্রডাকশন করা হয়েছে। সাধারণত সিনেমার পোস্ট প্রডাকশন দেশের বাইরে করা হয়। কিন্তু শরতের জবার পোস্ট প্রডাকশন বাংলাদেশে করার কারণ হচ্ছে, আমি যাতে প্রতিটি কাজে নিজে জড়িত থাকতে পারি। কালার গ্রেডিং, সাউন্ড ডিজাইন, এমনকি ডাবিংও আমি বেশ কয়েকবার করিয়েছি। সবকিছুতেই আমি যেন বসে থেকে করতে পারি এবং সেটাই পেরেছি।
সিনেমাটি দেখে সব বয়সের দর্শক প্রশংসা করছেন, কেমন লাগছে?
কুসুম শিকদার : প্রত্যাশা যা ছিল, তার থেকে আমি বেশি পাচ্ছি। বিভিন্ন বয়সের দর্শক সিনেমাটি পছন্দ করছে, এটা সব সিনেমার ক্ষেত্রে হয় না। দেখা যায়, টিনেজাররা যেটা পছন্দ করে চল্লিশোর্ধ্বরা তা পছন্দ করেন না। কিন্তু আমার সিনেমার ক্ষেত্রে আমি লক্ষ করেছি, সব বয়সের মানুষ এটি দেখছে। অনেক আনন্দিত হয়ে দর্শক এর প্রশংসা করছে। আমি প্রায়ই হলে যাই, নিজেও দর্শকের অনুভূতি দেখি। এখন পর্যন্ত আমার সামনে কোনো খারাপ মন্তব্য পাইনি। সবকিছু মিলিয়ে সিনেমাটি নিয়ে আমি অনেক খুশি।
শরতের জবার গল্প, প্রযোজনা, চিত্রনাট্য, এমনকি সিনেমাটিতে অভিনয়ও করেছেন, একজন মানুষের পক্ষে এতকিছু কীভাবে সম্ভব?
কুসুম শিকদার : শুধু তাই নয়, সিনেমাটির প্রমোশন আমি করছি, হলে ডিস্ট্রিবিউটও আমি করছি। আসলে সবকিছু পর্যায়ক্রমে হয়েছে। একসঙ্গে সব হয়নি। যখন চিত্রনাট্য করেছি, তখন অন্য কিছু করিনি। চিত্রনাট্য শেষ হওয়ার পর শুটিংয়ে গিয়েছি। পরিচালনা, প্রযোজনা, অভিনয় তিনটা একসঙ্গে ছিল। এটা বেশ ভালো চাপ ছিল আমার জন্য। শুটিংয়ে আমার সঙ্গে একটা স্ট্রং টিম ছিল, আবার পোস্ট প্রডাকশনেও আমার সঙ্গে খুব স্ট্রং একটা টিম ছিল। টিমের সহযোগিতায় আমি কাজটি ভালোভাবেই করতে পেরেছি।
প্রযোজনা, পরিচালনা, চিত্রনাট্য, ডিস্ট্রিবিউট, প্রমোশন এর সবই প্রথমবার করলেন, নতুন কী অভিজ্ঞতা ও চ্যালেঞ্জ ছিল?
কুসুম শিকদার : সিনেমা প্রযোজনা বেশ কঠিক কাজ, আমি এর আগে কোনো নাটকেও প্রযোজনা করিনি। তবে চিত্রনাট্য করা কঠিন লাগেনি। কারণ আমি অনেক দিন ধরেই লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত। যেহেতু এটা আমার নিজেরই গল্প, তাই চিত্রনাট্যে বেগ পেতে হয়নি। দীর্ঘদিন পর যেহেতু অভিনয় করেছি, এটা নিয়ে একটু চিন্তিত ছিলাম।
সিনেমাটি করার সময় ভালোমন্দ মিলিয়েই অভিজ্ঞতা ছিল। এমন সময় গেছে যে সিনেমাটি ঠিকঠাক মতো শেষ করতে পারব কিনা, এ ধরনের চিন্তা বা চাপ ছিল। অনেক সীমাবদ্ধতা ও বাধা ছিল। এ পর্যন্ত আসতে পেরে আলহামদুলিল্লাহ আমি খুশি।
খুব অল্প কাজ করে আপনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারও পেয়েছেন, এত গুণী অভিনেত্রী হয়েও আপনার কাজ কম কেন?
কুসুম শিকদার : আমি কখনো কাজের সংখ্যায় বিশ্বাসী নই। আমি লাক্স-আনন্দধারা ফটোজেনিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম ২০০২ সালে। তখন থেকে এ পর্যন্ত আমার জেনারেশনের আর্টিস্ট যারা, তাদের তুলনায় আমার কাজ সবসময়ই কম। আমি আমার তৃতীয় সিনেমায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার দ্বিতীয় সিনেমায় পেয়েছি। এটা আমার সৌভাগ্য। আমি ছোটবেলা থেকেই সবকিছু বেছে কাজ করতে পছন্দ করতাম।