এসআইদের অব্যাহতি, ভেরিফিকেশন ও বাজে সংস্কৃতি

প্রথম আলো রাফসান গালিব প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ২২:৪৭

এক যুগ ধরে ক্রমে কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠা শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটল ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে। আন্দোলনটা মূলত শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটাকেন্দ্রিক বৈষম্য নিরসনের দাবিতে। চাকরিতে এ দেশের তরুণেরা কোনো ধরনের বৈষম্য চান না। সেটি না চাওয়ার অনড় অবস্থান থেকেই একটি চরম স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটল। কিন্তু এর পরপরই পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত একটি এসআই ব্যাচের বিপুলসংখ্যক সদস্যকে অব্যাহতি দিয়ে তাঁদের ক্ষেত্রে বৈষম্যের অভিযোগ উঠল।


যে অভিযোগে এসআইদের অব্যাহতি


পুলিশের ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট হিসেবে অল্প কিছুদিনের মধ্যে চাকরিতে যোগদানের কথা ছিল সারদায় পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত আট শতাধিক সাব-ইন্সপেক্টর বা উপপরিদর্শককে (এসআই)। সেখান থেকে আড়াই শতাধিক উপপরিদর্শককে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বাদ দেওয়া হয়েছে। এরপর অর্ধশতাধিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তা–ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে।


একাডেমি কর্তৃপক্ষ থেকে এসআইদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ সম্পর্কে আমরা জানতে পারছি, নাশতা না খেয়ে হইচই করে মাঠের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করা, একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয়প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা, ক্লাসে শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করা।


পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একাডেমিতে ছোট-বড় নানা ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ ঘটে। টানা এক বছর কঠোর আবাসিক অনুশীলনের মধ্যে থাকতে গিয়ে অনেক ধরনের ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে আছে মারামারি, হাতাহাতিও। এসব অভিযোগের জন্য নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে মূলত। সে অর্থে এসআইদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তেমন গুরুতর না।



তবে ঢাকায় কর্মরত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দিলেন ভিন্নমত। তাঁর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানালেন, পুলিশের চাকরির ক্ষেত্রে বিসিএসের মাধ্যমে এএসপি এবং বিসিএস ছাড়া সার্জেন্ট পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা একাডেমিতে ‘ইন সার্ভিস ট্রেইনিংয়ে’ থাকেন। অর্থাৎ চাকরিতে যোগদানের পর তাঁদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। ফলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সরকারি চাকরিবিধি অনুসারে।


আর কনস্টেবল ও এসআইদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। তাঁদের চাকরিতে যোগদানই হয় প্রশিক্ষণের পর। ফলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। আর একটি ডিসিপ্লিনড বাহিনীর ক্ষেত্রে যেকোনো শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগই গুরুতর, বাইরে থেকে সেটি যতটাই লঘু মনে হোক না কেন। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তি হিসেবে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়াটা অযৌক্তিক নয়।


তবে ভুক্তভোগী কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁদের দাবি, এখানে আসলে ওই অর্থে শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা ঘটেনি। ২০ অক্টোবর বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তাদের (এএসপি) ৩০ অক্টোবর নিজেদের পাসিং আউট উপলক্ষে এক মাস আগ থেকে তাঁদের কুচকাওয়াজের অনুশীলন শুরু হয়।


কিন্তু প্রচন্ড গরমে কঠোর অনুশীলনের সময় বিরতিতে মাঠের পাশেই খাবার (ছোলা ও ডিম) পরিবেশন করা হতো। এ খাবারে অনেকের পেটে গোলযোগ দেখা দিচ্ছিল। এ ছাড়া ছোলার বাটিতে চামচ না থাকা, হাত ধোয়ার জন্য পানি না থাকা ইত্যাদি কারণসহ খাবার পরিবেশনা নিয়ে একধরনের অসন্তোষ তৈরি হয় প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে।


১ অক্টোবর তাঁরা সবাই মানে অনুশীলনে থাকা ছয় শতাধিক প্রশিক্ষণার্থী খাবার বর্জন করেন। তাঁদের সঙ্গে একাডেমি কর্তৃপক্ষ কথা বলে এক দিন পর থেকে খাবারের মেনুতে পরিবর্তনও আনে।


তবে ৭ অক্টোবর অনুশীলন চলাকালে আড়াই শতাধিক উপপরিদর্শককে আলাদা করে ফেলা হয় এবং তাঁদের তিন দিনের ভেতরে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়। তাঁরা সেটি যথাসময়ে জমাও দেন। পরে তাঁদের পাঁচ দিনের ছুটিতে বাড়িতে পাঠানো হয়।


ছুটিতে থাকা অবস্থায় তাঁরা জানতে পারেন এবং চিঠি পান যে তাঁদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


এখন তাঁদের প্রশ্ন, প্রতিবাদ করলাম সবাই, কিন্তু শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হলো শুধু আড়াই শতাধিকের বিরুদ্ধে, এটি কেন হলো? সবার ক্ষেত্রে কেন একই সিদ্ধান্ত হলো না?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us