১৯৭২ সালে রচিত বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানের ‘জন্ম’ ভারতে– এমন আলোচনার সূত্রপাত অনেকের কাছেই বিব্রতকর। বাহাত্তরের সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন কমিটির ৩৪ সদস্যের মাত্র চার জন বেঁচে আছেন। তারা হলেন ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, এম আমীর-উল ইসলাম ও আবদুল মুন্তাকীম চৌধুরী। এই চার জন হয়তো এমন অদ্ভুত কথা শুনে অধিক শোকে পাথর হয়ে গেছেন। তবে ওই কমিটির সদস্যদের পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে ভারতে বাংলাদেশের সংবিধান জন্মের ‘নয়া তথ্যে’ তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে তারা স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন সার্বভৌম এই দেশের মাটিতেই রচনা করা হয়েছে।’ বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও দর্শনকে ধারণ করে লাখো শহীদের রক্তে লিখিত বাংলাদেশের সংবিধান। খসড়া কমিটির সদস্যরা দিনরাত পরিশ্রম করে জনগণের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে রচনা করেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সংবিধান।’
ইতিহাস কী বলছে?
১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হলেও এর একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও দীর্ঘ যাত্রা আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যেমন কেবল ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ২৩ বছরের লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস; বাংলাদেশের সংবিধানও তেমনি বাংলাদেশের সংবিধান অন্য কোনো দেশের তৈরি করা নয়। এমন কী অন্য কোনো কোনো দেশের সংবিধান থেকে কিছু অনুচ্ছেদ ধার করে তৈরি করা কোনো ডকুমেন্ট নয়। বরং সংবিধানের প্রতিটি বাক্য, শব্দ, সেমিকোলন নিয়ে গণপরিষদে বিতর্ক হয়েছে।