আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা ঘটনা ঘটে চলেছে। পত্র-পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, পশ্চিমা গণতন্ত্র এখন মুমূর্ষু হয়ে পড়ছে। এর জন্য সরকারগুলোর জনবিচ্ছিন্নতাকে দায়ী করা হচ্ছে। জনগণ অভিজাত রাজনৈতিক শ্রেণির কাছ থেকে তাদের পাওনা কড়ায়-গন্ডায় বুঝে নিতে চাইছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উৎসাহী ইউরোপের অনেক দেশই এখন হতাশ। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালার পরও এই যুদ্ধে রাশিয়াকে পরাজিত করার মতো কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটও দেখা দিয়েছে। বহু দেশ তাদের সরকার নিয়ে খুশি নয়। যেসব দেশে নির্বাচন হয়েছে, সেগুলোয় জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জানিয়ে দিয়েছে, রাজনীতিতে জনবিচ্ছিন্ন করা হলে জনগণই তার জবাব দেবে।
কিন্তু ইতিহাস বলে, ইতিহাস থেকে মানুষ কখনো শিক্ষা গ্রহণ করে না। জনগণ যে প্রত্যাশা ও স্বপ্ন নিয়ে পরিবর্তনের পক্ষে রায় দেয়, নতুন শাসকেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন। তাই শাসক পরিবর্তন মানেই নতুন সদর্থক কিছু হবেই—এমন আকাঙ্ক্ষা মনে পুষে রাখলেও বাস্তবতা হয়তো ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দেয়। তবে পশ্চিমা জগৎসহ সারা বিশ্বই যে এখন প্রচণ্ড রকম অস্থির হয়ে রয়েছে, সে কথা বলতেই হবে। উগ্র ডানপন্থার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে সর্বত্র। বিশদ পরিসরে তার আলোচনা হওয়া দরকার।
২.
বিশ্বরাজনীতির এই ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্যে সাম্প্রতিক একটি সংবাদ চোখে পড়ল। সংবাদটি আমাদের দেশের আর্থসামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রসঙ্গেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কারও সঙ্গেই শত্রুতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুতা—এ রকম একটি অঙ্গীকার নিয়েই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি তৈরি হয়েছে। অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশও বিদেশি অনেক দেশের কূটনীতি ও রাজনীতির সঙ্গে বোঝাপড়া করে চলে। সেভাবেই চলতে হয়। এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারত ও সৌদি আরবের নাম চলে আসে সর্বাগ্রে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের সঙ্গে নানা ধরনের আলাপ-আলোচনার জন্ম হয় এবং তাকে কেন্দ্র করেই এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমাদের দেশে যেসব মেগা প্রজেক্টের কাজ হয়েছে, তাতে মূলত ভারত ও চীনের নাম সবার আগে আসে। সেই দুই দেশের বর্তমান সম্পর্কের উন্নতিই আমাদের আজকের আলোচনার মূল প্রতিপাদ্য।