সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও শিশুদের মনোজগৎ

বিডি নিউজ ২৪ খান মো. রবিউল আলম প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:২৮

শিশুরা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দেখেছে। আন্দোলন নিয়ে তাদের মনে প্রশ্ন ও উৎকণ্ঠা জেগেছিল। ঢাকার মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নয়নিকা আলম (১০), রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নার্সারিতে অধ্যয়নরত রায়াত খান (৭) এবং রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী মালিহা ইসলামের (৮) সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার ও সন্তুষ্টি পর্যবেক্ষণ করছি প্রায় দেড় থেকে দু-বছর। এই তিন শিশুর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার ও তার প্রভাব নানামাত্রিক। শিশুরা মূলত মোবাইলে গেম খেলে দিনে গড়ে চার-পাঁচ ঘণ্টা ব্যয় করে। এর বাইরেও তারা বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট উপভোগ করছে, যা তাদের মনোকাঠামোর ওপর ফেলছে বিশেষ প্রভাব।


ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন যুদ্ধ, জুলাইয়ে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান তারা সোশ্যাল মিডিয়া ও টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছে ও দেখছে। এই বিষয়গুলো তাদের মনে তৈরি করছে গভীর অভিঘাত। আন্দোলন-সহিংসতা দেখে নয়নিকা তার বাবাকে জিজ্ঞেস করেছে, টেলিভিশনে সবাই এত শাউট করছে কেন? শেখ হাসিনাও খুব শাউট করছেন। বাইরে গুলির শব্দ হচ্ছে। সিটি তো আনলিভেবল হয়ে গেল (মহানগর বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেল)। লেটস লিভ দ্য কান্ট্রি (চলো দেশ ছাড়ি)। অর্থাৎ সহিংতার কারণে শিশুরা ভয় পেয়েছে, দেশ ছাড়তে চাচ্ছে।


শিশুরা নিয়মিত ফেইসবুক, রিল, ইউটিউব ও টিকটক দেখছে। স্কুল বন্ধ থাকায় এবং কমিউনিটিতে বিনোদনের অভাবের কারণে তাদের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে মোবাইল ফোন। শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্সপোজার দেশের রাজনীতি, ফিলিস্তিন, ভারত ও শেখ হাসিনা ইস্যুতে বিশেষ মনোভঙ্গি তৈরি করেছে— যা কয়েকটি বর্গে নিচে তুলে ধরা হলো:


শিশুদের ফেইসবুক, রিল, ইউটিউব ও টিকটক ব্যবহার


শিশুদের মূল আসক্তি রিল, ইউটিউব ও টিকটকে। ইউটিউব ও টিকটক ঘিরে শিশুদের সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষের বাইরে দুনিয়াজুড়ে তাদের বন্ধুপরিসর বিস্তৃত হচ্ছে। এ সংযুক্তি দুনিয়াদারির খবর নিতে তাদের সহায়তা করছে। ইউটিউব ও টিকটক ঘিরে শিশুদের ভেতর এক বৈশ্বিক মন তৈরি হচ্ছে যা সংবেদনশীল ও সংযুক্তিমূলক।



এর যেমন ইতিবাচক দিক আছে, তেমন রয়েছে নেতিবাচক দিকও। এ নেটওয়ার্কের আওতায় পড়ে শিশুরা বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। নানা ধরনের স্ল্যাং শিখছে। রায়াত খানকে তার এক ফিলিপিনো বন্ধু বারবার পোক করছে যে তুমি অ্যাডপ্টেড বেবি। রায়াত খান তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে, এটা ঠিক নয়। তার বাবা-মা আছে। রায়াত ছবিও শেয়ার করেছে। কিন্তু সে কিছুতেই মানতে নারাজ। এতে রায়াত খান মানসিকভাবে আহত হয়েছে। এই ব্যাড ট্রিটমেন্ট সে নিতে পারেনি।


সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগের জন্য আমাদের শিশুদের যে ধরনের দক্ষতা দরকার তার ঘাটতি রয়েছে। ভাষাগত ও ভাবপ্রকাশে কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে মজার ব্যাপার হলো তারা খুব দ্রুত শিখতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সংযোগ শিশুদের ভাবপ্রকাশে দক্ষ করে তুলছে। ক্যাটাগরিক্যালি চিন্তা করতে সহায়তা করছে। শিশুরা নানাসব জটিল অ্যাপ ব্যবহার করে ভিডিও ও কার্টুন বানানো শিখছে। শিশুরা ক্যাপকাট, ইনফিনিট পেইন্টার ব্যবহার করে টিকটক কনটেন্ট বানাচ্ছে। শিশুরা বয়স লুকিয়ে টিকটক ও ইউটিউবে অ্যাকাউন্ট খুলছে।


স্যোশাল মিডিয়া ঘিরে শিশুদের মধ্যে সৃজনশীল চিন্তার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। শিশুদের অনস্ক্রিন সময় কাটানোর অভ্যাস বাড়ছে, এতে চোখের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। একই সঙ্গে মনোযোগ ও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহের অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নিয়মিত খাবার গ্রহণ, রাত জেগে মোবাইল দেখা, খিটমিটে মেজাজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মোবাইল ছেড়ে দিলেই একাকিত্ববোধ, বিরক্তির মনোভাব ও রেগে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। শিশুরা পরিবারের সদস্যদের চেয়ে দূরের বন্ধুদের সঙ্গে সখ্য গড়তে ও সময় কাটাতে ভালোবাসছে। শিশুরা দীর্ঘসময় মোবাইলে যেসব গেম খেলছে তারমধ্যে রোবলক্স অন্যতম।


ফেইসবুক, রিল, ইউটিউব ও টিকটকের বিনোদন দারুণভাবে উপভোগ করছে শিশুরা। এর প্রধান কারণ ট্রল। ট্রল ভিডিওগুলোতে বিষয়বস্তুকে হেয়, মজাদার ও চটকদার করে উত্থাপন করা হয়। শিশুরা এসব ফানি ভিডিওগুলো উপভোগ করছে। বিনোদন পাচ্ছে। উপস্থাপিত ব্যক্তি সম্পর্কে এক ধরনের মূল্যায়নও তৈরি হচ্ছে। শিশুরা ওইসব কনটেন্ট দেখে নানা রকম পাঠ নিচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us