গুলিতে আহত ছেলে আসিফুর রহমানকে নিয়ে রিকশায় করে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি করছিলেন আমজাদ হোসেন। তখনই ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হয় তার।
ছেলে তাকে বলেছিলেন- “বাবা আমি আর বাঁচব না। তোমার মনের আশা আমি পূরণ করতে পালাম না। আমাকে মাফ করে দিও।”
এভাবেই নিজের সন্তানকে হারানোর কথা জানিয়েছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের কেরেঙ্গাপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেন।
ছেলে আসিফুর রহমান আসিফ কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চলা সহিংসতার মধ্যে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
একটি পোশাক কারখানায় কাজ করা ১৭ বছর বয়সী আসিফ বাবার সঙ্গে মিরপুরে থাকতেন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়। তার বড় বোনের ঢাকায় বিয়ে হয়েছে।
আট মাস বয়সের ছোট ভাই ও অপর তিন বোনকে নিয়ে নালিতাবাড়ী কেরেঙ্গাপাড়া গ্রামে থাকেন তার মা ফজিলা খাতুন।
ছেলে হারানো ফজিলা খাতুন শুক্রবার রাতে বলেন, “আমার ছেলে খুবই ধীরস্থির ও শান্ত স্বভাবের ছিল। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত, তের ছিফারা পর্যন্ত পড়েছে।
“কিন্তু অভাব অনটনের সংসারের হাল ধরতে ছোট বয়সেই সে পড়াশোনা ছেড়ে চাকরি করতে যায়। এক বছর আগে ঢাকার মিরপুরের একটি গার্মেন্টসে ১৩ হাজার টাকা বেতনে চাকরি পায় সে।”
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আসিফ ছিল তাদের একমাত্র সম্বল। অকালে তার মৃত্যুতে তাদের সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।