১৯৪০-এর দশকে স্থাপিত মার্কেটটি এখনো রাজধানীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেনাকাটার জায়গাগুলোর একটি। স্থানীয় দোকানমালিক ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার মানুষ এই মার্কেটে আসেন। ঢাকা শহরের সবচেয়ে পুরোনো ও ব্যস্ততম শপিং সেন্টারগুলোর একটি মৌচাক মার্কেট। মৌচাক মার্কেটের ব্যস্ততম গলি হলো পশ্চিম গলি!
শনিবার দুপুরে কটকটে রোদ মাথায় নিয়ে গেলাম রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত মৌচাক মার্কেটে। তখনো পশ্চিম গলি অর্থাৎ গয়নার গলির প্রতিটি দোকানেই দু–তিনজন করে ক্রেতা, জিনিসপত্রের দরদাম করছেন। কম দামে সাজগোজের জিনিসপত্র কেনার জন্য এই গলির নামডাক আছে।
কাজলের দাম ২০ টাকা থেকে শুরু, সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা। লিপলাইনার, লিপ অয়েল, লিপগ্লস, লিপস্টিকের দাম ৫০ টাকা থেকে শুরু, পাওয়া যাবে ৩০০ টাকার মধ্যে। বেশ কিছু কানের দুল পাওয়া যাবে মাত্র ১০০ টাকায়। জমকালো ঝুমকা কিনতে গেলে পকেট থেকে বেরিয়ে যাবে ২৫০ টাকা। দেদার বিক্রি হচ্ছে ‘ফলস নেইল’। ৯৬ পিস আলগা নখের দাম মাত্র ২৫০ টাকা। ফলস ল্যাশ পাওয়া যায় ৩০ টাকায়। লুজ পাউডারের কৌটা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। ১০০ থেকে ৩০০ টাকায় পাওয়া যাবে সব সময় হাতে পরার জন্য বা কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় পরার জন্য আধুনিক নকশার সুন্দর সুন্দর চুড়ি: থ্রেড চুড়ি, পাথরের চুড়ি, ইমিটেশনের চুড়ি, গোল্ড প্লেটেড চুড়ি, ডায়মন্ড কাট চুড়ি, ধাতব চুড়ি, ব্রেসলেট। তিনটি দোকান রয়েছে কেবল চুড়ির জন্য।
রাজধানীতে অলিগলির শেষ নেই। তবে নারীদের অন্যতম পছন্দের একটা গলি হলো মৌচাক মার্কেটের পশ্চিম গলি। মুখে মুখে এ গলির নাম হয়ে গেছে ‘অর্নামেন্ট গলি’। কারণ, এই গলিতে আছে ৫০টির মতো দোকান, যেগুলোতে পাওয়া যায় সাজসজ্জার নানা উপকরণ। সারা বছরই এই গলিতে ভিড় লেগে থাকে, তবে উৎসবের মৌসুমে পা রাখাই দায় হয়ে পড়ে! একাধিক দোকানমালিক ও কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, গড়ে প্রতি মাসে এই গলিতে যত বিক্রি হয়, সেখান থেকে দোকানভেদে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ থাকে।
গলির একেবারে প্রথম কয়েকটি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে গ্রীষ্ম-সংগ্রহ। মেয়েদের কুর্তা আর কামিজগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। তবে যেটার দাম ৭৫০ বা ৮০০ টাকা চাইবে, আপনি সেটি আরামসে ৫০০ টাকায় কিনতে পারবেন। পায়জামা, পালাজ্জো আর প্যান্ট পাওয়া যায় ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়।