প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের আগে এবং ভারত সফরের পরের দৃশ্যপট

বিডি নিউজ ২৪ সুরেশ কুমার দাশ প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১৯:৩২

মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রধান মিত্র ভারতের সঙ্গে ‘রক্তের সম্পর্ক’ হেতু বন্ধুত্বের নিবিড় বন্ধন থেকে আলগা থাকা চীনকে এবার নতুন সম্পর্কের সুতোয় বাঁধতে চাইছে ঢাকা। এজন্য দুই পক্ষের মধ্যে বেশ সৌজন্যের মধ্য দিয়ে নতুন সম্পর্কের বন্ধন ‘নিবিড়’ হচ্ছে। পায়রা বন্দরকে ঘিরে তৈরি এই 'নিবিড়' বন্ধন, যা দক্ষিণ অঞ্চলের সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (সিডি)। কারণ বাংলাদেশের প্রয়োজনে চীনকে আরও দূরে ঠেলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ চীন বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগী দেশ।


প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে-পরে চীনের সঙ্গে কী ঘটতে যাচ্ছে বোঝাই যাচ্ছিল না। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাওয়ের সফর থেকেও খোলামেলা কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না, চীন আসলে কী চাইছে বা কী পাচ্ছে। কিংবা চীনকে কীভাবে সন্তুষ্ট করবে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের আগেই পত্রপত্রিকায় তাই ‘নিবিড় কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বে’র অংশ হিসাবে উঠে এসেছে পায়রা সমুদ্রবন্দর ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন উদ্যোগের খবর।


এখন হয়ত এই উদ্যোগই চীনকে বাগে আনার কৌশল ঢাকার কাছে। কারণ ভারতের বাগড়ায় বাংলাদেশ চীনকে অনেকটা এড়িয়ে না গেলেও সিদ্ধান্ত বদল করে আসছিল। এক নাগাড়ে ভারত এসে বাংলাদেশের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছিল। বলা যায়– অনেকটাই অস্বিস্তকর ও গুমোট অবস্থার জন্ম দিচ্ছিল। তার ওপর বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেলমাধ্যমে পণ্য পরিবহন বাংলাদেশের অনেকের পছন্দ হয়নি। কিন্তু এরচেয়ে বড় কথা তিস্তার জল আরও ঘোলা করা হয়েছে।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে অনেক হিসেবনিকেশ পাল্টে গেছে। পররাষ্ট্রনীতির এই হিসেবের ভবিষ্যৎ দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা এখানে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের রাজ্য সরকারের ব‍্যাপক বাগড়া বা স্বার্থও আছে।


এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের দিকে তাকিয়ে থাকার বিষয় রয়ে গেছে। ভারত সফর নিয়ে আমাদের দেশের মধ‍্যে এত প্রতিক্রিয়ার মধ‍্যেও চীনের কোনো বিশেষ হোলদোল চোখে পড়ছে না। তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে গেছে তা কোনোভাবেই হাজির করেনি। যদিও ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চীনের অনেকগুলো প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে থেকে বাংলাদেশে বিচরণ করছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ডেস্কের সঙ্গে মিটিং, আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। যা চলছেই। সকলেই চায় সম্প্রীতিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে।


কিন্তু ভারতের বিষয়ে আর বিশেষ লুকোছাপাও ছিল না। বিশেষ করে ভারতের ইশারা-ইঙ্গিতে বাংলাদেশের তিস্তা মহাপরিকল্পনার সিদ্ধান্ত বদলে যাওয়া। বাংলাদেশের এভাবে সিদ্ধান্ত বদলে যাওয়ার স্পষ্ট প্রমাণও আছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়েত্রার সফরে এবং এরপর শেখ হাসিনার ভারত সফরে এই হিসেব উল্টে গেছে। ভারত থেকে আসার পর শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মিত্রশক্তি। ভারত আমাদের শুধু মিত্রশক্তি নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদান ইতিহাস থেকে কেউ মুছতেও পারবে না। তাই বলে আমরা আমাদের স্বার্থ বিসর্জন দিতে পারি না। ভারত তিস্তা এবং ফারাক্কায় আমাদের লাভ করছে না ক্ষতি করছে সেদিকটা দেখতে হবে। মজার বিষয় হচ্ছে তিস্তার একটা সঙ্কটের সঙ্গে আরও একটি সঙ্কট সৃষ্টি করে তিস্তা নিয়ে দুটি সমস্যা সৃষ্টি করা। এজন্য তাদের কাছে ধর্না দেওয়ার পরিমাণ বাড়বে চীনের কাছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ধর্না দেওয়ার মতোই।


অথচ তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের নিজেরই উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা ছিল, অন্তত এই আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকেই। এটা নিয়ে গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারের পক্ষ থেকে উত্তরাঞ্চলের জনগণকেও আশ্বস্ত করা হয়েছিল। অর্থাৎ জনগণও সাক্ষী। যে কারণে তিস্তায় এখন বাংলাদেশের কোনো হিসেবের মিল পাচ্ছে না সমালোচক ও বিশেষজ্ঞরা।


তিস্তা নিয়ে চীনের মহাপরিকল্পনার পাল্টা কৌশল এরই মধ্যে পাকাপোক্ত ভারতের। যেটা ভারতের কথার ফুলঝুরি। দীর্ঘসূত্রতার নতুন কৌশল। অর্থাৎ তিস্তা নিয়ে আগে একটি খেলা ছিল। নতুন চুক্তির ফলে তিস্তা নিয়ে তাদের খেলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুটি। একটিতে ঝুলে আছি ২০ বছর। বাংলাদেশ কী কারণে এভাবে নিজেই ঝুলে আছে বোঝা দায়! যারা নিজেদের ঝুলিয়ে রাখার পরিবর্তে যে গলায় ফাঁস লাগাটা বোঝে না তাদের মৃত্যু তো আত্মহত্যার চেয়ে বেশি বোকামি। আত্মহননকারীর লড়াইয়ের জন্য কিছুই থাকে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us